আপত্তির জবাব

খৃষ্টধর্মের মোকাবেলার জন্য কে বুক পাতিয়া দিয়াছে?

কেবলমাত্র হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালামই ঐ একক ব্যক্তিত্ব, যিনি খৃষ্টধর্মকে দাজ্জালীয়াত সাব্যস্ত করিয়াছেন এবং খৃষ্টধর্মের উপর খুব কঠোর আক্রমণ করিয়াছেন। ইহা ঐ যুগের কথা যখন কিনা ইংল্যাণ্ড হইতে আওয়াজ উঠিতেছিল যে, কেবল মাত্র ভারতবর্ষেই নয়, আমরা প্রাচ্য হইতে পাশ্চাত্য পর্যন্ত ক্রুশ গাড়িয়া দিব এবং কোন কোন আওয়াজ তো উচ্চস্বরে ধ্বনিত হইতেছিল যে, আমরা আফ্রিকা হইতে যাত্রা করিব এবং মক্কা পর্যন্ত পৌঁছিব এবং ততদিন পর্যন্ত আমরা শান্ত হইব না যতক্ষণ পর্যন্ত না ক্রুশের পতাকা মসজিদুল হারামে গাড়িয়া দেই। ঐ সময় হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাম ব্যতীত কে ছিল, যে তাহাদিগকে দাজ্জাল সাব্যস্ত করিতেছিল? তিনি কে ছিলেন, যিনি খৃষ্টধর্মকে নিশ্চিহ্ন করিয়া দেওয়ার জন্য জান ও মালের বাজী রাখিয়াছিলেন? ইনি হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামই ছিলেন, যিনি খৃষ্টধর্মের বিরুদ্ধে যেভাবেই সম্ভব ছিল নিজের বুক পাতিয়া দিয়াছিলেন। নতুবা আলেমদের মধ্য হইতে অনেকে খৃষ্টান হইয়া এবং ইসলামকে পরিত্যাগ করিয়া খৃষ্টধর্মের সমর্থনে এবং হযরত আকদাস মুহাম্মাদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে নেয়াহেত অপবিত্র আক্রমণ করিতেছিল। ইনি কেবলমাত্র মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামই ছিলেন, যিনি খৃষ্টধর্মের উপর কার্যকরী ও ফলপ্রসূ আঘাত হানিতেছিলেন। বস্তুতঃ তিনি (আঃ) বলেনঃ-

“খুব স্মরণ রাখ যে, ঈসার মৃত্যু ব্যতীত ক্রুশীয় ধর্ম-বিশ্বাস মরিতে পারে না। ইহা হইতে ফায়দা উঠাও। কুরআনের শিক্ষার বিরুদ্ধে তাঁহাকে জীবিত মনে করা হইতেছে। তাঁহাকে মরিতে দাও, যাহাতে, এই ধর্ম (ইসলাম) জিন্দা হয়।” (কিশতিয়ে নূহ, পৃষ্ঠা-১৫)

অনুরূপভাবে তিনি (আঃ) কাদিয়ানের সালানা জলসায় বক্তৃতা করিতে গিয়া বলেনঃ-

“মসীহ (আঃ)-এর মৃত্যু এবং ইসলামের জীবন—এই দুইটি বিষয় একে অন্যের সহিত খুব গভীর সম্পর্ক রাখে এবং মসীহ (আঃ) এর মৃত্যুর বিষয়টি এই যুগে ইসলামের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় হইয়া গিয়াছে।”

তিনি (আঃ) আরও বলেনঃ-

“মসীহ (আঃ) বাঁচিয়া থাকার ধারণা দ্বারা যে বিবাদ সৃষ্টি হইয়াছে, উহা খুবই বাড়িয়া গিয়াছে।... ... অতীতে এই কল্পিত ধারণাটিতো কেবলমাত্র একটি ভুলের ব্যাপার ছিল। কিন্তু আজ এই ভুল একটি অজগরে পরিণত হইয়াছে, যাহা ইসলামকে গিলিতে চাহিতেছে। ... ইসলাম অধঃপতিত অবস্থায় রহিয়াছে এবং খৃষ্টধর্মের নিকট ঈসা (আঃ)-এর বাঁচিয়া থাকার অস্ত্রটিই রহিয়াছে। ইহা লইয়া তাহারা ইসলামকে আক্রমণ করিতেছে এবং মুসলমানগণের সন্তান-সন্ততিরা খৃষ্টানদের শিকার হইতেছে। ... ... এই জন্য খোদাতায়ালা চাহিলেন যে, এখন মুসলমানদিগকে সতর্ক করা প্রয়োজন।” (মালফুজাত, দশম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৩৬–৩৩৭ ও ৩৪৫)।

তিনি (আঃ) অতঃপর আরও বলেনঃ-

“তোমরা ঈসা (আঃ)-কে মরিতে দাও। ইহাতে ইসলামের জীবন রহিয়াছে। অনুরূপভাবেই মুসায়ী মসীহ (আঃ)-এর পরিবর্তে মুহামসীহ (আঃ)-কে আগমন করিতে দাও। ইহাতে ইসলামের গৌরব রহিয়াছে।” (মালফুজাত, দশম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৫৮)

অতঃপর তিনি (আঃ) আরবী ভাষায় বলেনঃ-

وقد جاء يوم للهدم ربّنا
يدقّ أجزاء الصليب ويكسر

“এখন নিশ্চিতভাবে খোদায়ী যুদ্ধের দিন আসিয়া গিয়াছে। অতএব, আজ আমাদের প্রভু ক্রুশকে টুকরা টুকরা করিয়া দিবেন।”

والبغى من المولى فيما يسرف
وما هو الا فى العلوب يكسر

“আমার একটি আকাংখা ও উদ্দেশ্য। ইহার উপর আমার আনন্দ নির্ভর করে এবং ঐ আকাংখা এই যে, ক্রুশ চূর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া যাইবে।”

অতঃপর তিনি (আঃ) আরও বলেন:—

ووالله انى اكسرن صليبكم
ولومزقت ذرات جسمى واكسر

“এবং হে খৃষ্টানরা! খোদার কসম, আমি তোমাদের ক্রুশকে চূর্ণবিচূর্ণ করিয়া ছাড়িব, এমনকি যদি এই পথে আমার দেহ খান খান হইয়া যায় এবং আমাকে টুকরা টুকরা করিয়া দেওয়া হয়।”

আপনার উত্তর যোগ করুন

আপনার উত্তরটি একজন এডমিন রিভিউ করে অনুমোদন করবেন।