আপত্তির জবাব

তিনি কে ছিলেন, যিনি ইংরেজদের মিথ্যা খোদায়ীকে চ্যালেঞ্জ করিয়াছেন?

যাহাই হউক, ইনি হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামই ছিলেন, যিনি একদিকে খৃষ্টানদের সহিত একটার পর এক বিষয়ে জড়াইয়া পড়েন এবং ক্রুশীয় ধর্ম-বিশ্বাসের উপর জোরালোভাবে হামলা করিতেছিলেন। ইহার বিরুদ্ধাচরণে ছিল মুসলমান আলেমরা। তাহারা আজ আহমদীদের গর্দান কাটা বৈধ মনে করে। তাহারা আজ মিথ্যা অপবাদ লাগাইতেছে যে, আহমদীরা ইংরেজদের সমর্থনের জন্য দাঁড়াইয়া ছিল। কিন্তু ঐ সময় ইহাদের কার্যকলাপ ইসলামের পৃষ্ঠে খঞ্জর বিদ্ধ করার তুল্য ছিল। তাহারা কঠোরভাবে হযরত মসীহ আলাইহেস সালামকে জীবিত ঘোষণা করিতেছিল এবং হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামকে হত্যা করা বৈধ বলিয়া বারবার ঘোষণা করিতেছিল এবং বড় গর্বের সহিত ঘোষণা করিয়া ফিরিতেছিল যে, তাহারা ভারতের এক প্রান্ত হইতে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত এই ব্যক্তির (অর্থাৎ মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের) বিরুদ্ধে কঠোর বিরুদ্ধাচরণের এবং ঘৃণার আগুন লাগাইয়া দিয়াছে এবং কেবলমাত্র ভারতেই নহে, বরং তাহারা বলিত যে, ‘মক্কা ও মদিনা ছাড়াও আরবের এক প্রান্ত হইতে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমরা ঘৃণা, হিংসা ও বিদ্বেষের পরিবেশ সৃষ্টি করিয়া দিয়াছি, যে কেন সে মসীহ আলাইহেস সালামের মৃত্যু ঘোষণা করিয়াছে?’ মোট কথা, মসীহের মৃত্যুর এই ঘোষণাই উপমহাদেশে তাঁহার (আঃ) বিরুদ্ধাচরণের অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করিয়া দিয়াছে। তাহা হইলে কে ছিল ইংরেজদের সমর্থনকারী? কে ছিল তাহাদের খোদার জীবনদানকারী এবং কে ছিল তাঁহার মৃত্যু ঘোষণাকারী? এত ছোট ও মামুলি কথাও যাহাদের বুদ্ধি-জ্ঞান আসে না, তাহাদের জ্ঞান-বুদ্ধি সম্বন্ধে কি বলা যাইতে পারে? হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালাম বলেনঃ-

“পাদ্রীদের মিথ্যাচার যখন চরম সীমায় পৌঁছিয়া গেল তখন ‘হুজ্জতে মুহাম্মদীয়া’ (সাঃ) (অর্থাৎ দলিল প্রমাণের সাহায্যে হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের সত্যতা প্রমাণ – অনুবাদক) পূর্ণ করার জন্য খোদা আমাকে প্রেরণ করেন। এখন কোথায় রহিয়াছে পাদ্রীরা? কেন তাহারা আমার মোকাবেলা করে না? আমি অসময়ে আগমন করি নাই। আমি ঐ সময়ে আগমন করিয়াছি যখন খৃষ্টানদের দ্বারা ইসলাম পদদলিত হইয়াছে। ... ... এখনতো কোন পাদ্রীকে আমার সম্মুখে লইয়া আস, যে বলে যে আঁ-হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম কোন ভবিষ্যদ্বাণী করেন নাই। স্মরণ রাখ, ঐ যুগ আমার পূর্বেই অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে। এখন ঐ যুগ আসিয়া গিয়াছে, যে যুগে খোদা ইহা প্রকাশ করিতে চাহেন যে, ঐ রাসূলে মুহাম্মাদ আরাবী (সাঃ) যাঁহাকে গালি-গালাজ করা হইয়াছে, যাঁহার নামের অসম্মান করা হইয়াছে এবং যাঁহার বিরুদ্ধে মিথ্যারোপে হতভাগ্য পাদ্রীরা কয়েক লক্ষ বই পুস্তক এই যুগে লিখিয়া প্রকাশ করিয়াছে, তিনিই হইলেন সত্যবাদী এবং সত্যবাদীদের নেতা।” (হাকিকাতুল ওহী, পৃষ্ঠা ২৭৩–২৭৪)

তিনি (আঃ) আরও বলেনঃ-

“অতএব অনেক কিছুই বলা হইল যে, খৃষ্টানদের খোদার মৃত্যু হইয়াছে এবং এই বিনত বান্দা খোদাতায়ালার তরফ হইতে মসীহ ইবনে মরিয়মের রঙে আবির্ভূত হইয়া এই দাজ্জাল–স্বভাব বিশিষ্ট লোকদিগের উপর যে আক্রমণ করিয়াছে, তাহা বর্শার আক্রমণের চাইতে কম নহে। তাহাদিগকে পবিত্র দ্রব্য–সামগ্রী দেওয়া হইয়াছিল। কিন্তু তাহারা ইহার সহিত অপবিত্র দ্রব্য মিশাইয়া দিয়াছে এবং ঐ কাজ করিয়াছে, যাহা দাজ্জালের করা উচিত ছিল।” (এজালায়ে আওহাম, পৃষ্ঠা ৩৬১–৩৬২)

আপনার উত্তর যোগ করুন

আপনার উত্তরটি একজন এডমিন রিভিউ করে অনুমোদন করবেন।