আপত্তির জবাব

ইসলামকে জীবন্ত করার জন্য আহমদীয়াত একটি কর্মতৎপর আন্দোলন

এখন রহিল খৃষ্টান জগতের কথা। তাহা হইলে ইহাই দেখিতে হইবে যে, আহমদীয়াত কিভাবে ইসলামের বিরুদ্ধে একটি ভয়াবহ আন্দোলনরূপে পরিচিত হইয়াছে, যেমন কিনা আহমদীয়াতের শত্রুরা প্রপাগাণ্ডা করিতেছে। অথবা বিপরীতভাবে ইহাই দেখিতে হইবে যে, আহমদীয়াত কিভাবে খৃষ্ট-ধর্মের বিরুদ্ধে একটি ভয়াবহ আন্দোলনরূপে পরিচিতি লাভ করিয়াছে। এই কাহিনীও নতুন ও পুরাতন গবেষকদের ভাষাতেই শুনুন।

এই মুহূর্তে বিভিন্ন রেফারেন্স আমার সম্মুখে রহিয়াছে। এইগুলিকে আমি ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ হইতে সংকলন করি নাই। কিন্তু বন্ধুগণের আগ্রহের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া এবং এই কথা বুঝানোর জন্য যে, আহমদীয়া আন্দোলনের প্রকৃত মাহাত্ম্য কি এবং ইহার উদ্দেশ্যবলী কি, আমি কোন কোন খৃষ্টান চিন্তাবিদের ভাষায় আহমদীয়াত সম্বন্ধে তাহাদের ঐ সকল প্রতিক্রিয়া তুলিয়া ধরিতেছি, যাহা তাহারা আহমদীয়াতের সহিত পাল্লা দেওয়ার পর ব্যক্ত করিয়াছে। ইসলামের প্রতিরক্ষায় আহমদীয়াতের পক্ষ হইতে দাঁত-ভাঙ্গা কার্যক্রমকে উপলব্ধি করিয়া খৃষ্টানেরা নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করিয়াছে। বস্তুতঃ একদা স্ক্যান্ডিনেভিয়ার বিভিন্ন খৃষ্টান গীর্জার একটি কমিশন ১৯৬৯ খৃষ্টাব্দে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। এই কমিশনটি আহমদীয়া আন্দোলন সম্বন্ধে বিশ্লেষণ করার জন্য কায়েম করা হইয়াছে। এই কমিশনের একজন সদস্য বার্টিল ওয়াইবার্গ লিখেনঃ-

“ঈসার (আঃ)-এর খোদার পুত্র হওয়ার ব্যাপারে যে সকল আপত্তি আহমদীয়াতের পক্ষ হইতে উত্থাপন করা হইয়া থাকে, তাহা হইতে এই কথা সুস্পষ্ট হয় যে, আহমদীয়া জামা’ত খৃষ্টধর্মকে নিজেদের সবচাইতে বড় দুশমন মনে করে। খৃষ্ট-ধর্ম যে বিশ্বজনীন ধর্মের পদ-মর্যাদা অধিকার করিয়া রাখিয়াছে, ইহার সবচাইতে অধিক বিরোধী হইল আহমদীয়া জামা’ত এবং তাহারা ইসলামের হারানো ‘আযমত’ ও গৌরবকে ফিরাইয়া আনিতে চাহিতেছে, অর্থাৎ ঐ ‘আযমত’ যাহা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর মৃত্যুর পর হইতে আরম্ভ করিয়া একশত বছর পর্যন্ত ইসলাম অর্জন করিয়াছিল, যখন এই ধর্ম প্রশান্ত মহাসাগরের চতুর্দিকের দেশসমূহে আগুনের মত ছড়াইয়া পড়িয়াছিল এবং ইউরোপেও অনেক দূর পর্যন্ত গিয়া পৌঁছিয়াছিল। দাবী তো অনেক বড়। কিন্তু ভবিষ্যতই বলিতে পারিবে যে ইহা সফল হইবে কি-না। আহমদীয়া জামা’ত এই পর্যন্ত যে প্রচার প্রচেষ্টা করিয়াছে, উহা ইহাতে ইহাই প্রতীয়মান হয় যে, তাহাদের দাবীর পশ্চাতে কর্মতৎপরতার শক্তি রহিয়াছে। ইহা হইল কর্মতৎপর ইসলাম।”

ইনি হইলেন একজন ইউরোপীয় খৃষ্টান চিন্তাবিদ এবং পাদ্রী। ইনিতো আহমদীয়া জামা’তের পশ্চাতে একটি কর্মতৎপরতার শক্তি দেখিয়াছেন। তিনি ইংরেজদের কোন শক্তি দেখিতে পান নাই। কিন্তু যদি তিনি ‘আরেফ বিল্লাহ্‌’ (আল্লাহ সম্বন্ধে তত্ত্বজ্ঞানী) হইতেন এবং রুহানীয়াতের চক্ষু যদি তাহার অদৃষ্টে থাকিত, তাহা হইলে তিনি আহমদীয়াতের পশ্চাতে কেবলমাত্র একটি কর্মতৎপরতার শক্তিই দেখিতেন না, বরং তিনি আহমদীয়াতের পশ্চাতে একজন সর্বশক্তিমান মহান খোদার শক্তি দেখিতে পাইতেন, যিনি নিজের হস্তে আহমদীয়াতের বৃক্ষ কাদিয়ানে লাগাইয়াছিলেন। ইহা ঐ বৃক্ষ, যাহা অন্য কোন হস্ত লাগায় নাই এবং না অন্য কোন হস্তের এই ক্ষমতা রহিয়াছে যে, সে ইহাকে উৎপাটিত করে। এই বৃক্ষ রোপনকারীও ছিলেন খোদা এবং ইহাকে জীবিত ও কায়েম রাখা এবং ইহাকে বৃদ্ধি করা ও সুশোভিত করার মালিকও হইলেন আমাদের যীন্দা খোদা।

আপনার উত্তর যোগ করুন

আপনার উত্তরটি একজন এডমিন রিভিউ করে অনুমোদন করবেন।