আপত্তির জবাব

একটি সাধারণ প্রশ্ন ও একটি বেদনাপূর্ণ বাস্তব সত্য

প্রশ্ন এই যে বাহিরের দেশগুলির ও শক্তিগুলির ইহারা এজেন্ট, না আমরা এজেন্ট? আমরা সদা-সর্বদা মুসলমানদের সকল বিপদে প্রথম সারিতে কুরবানী পেশ করিয়াছি। মুসলিম জাহানে কোথাও মুসলমানদের যখন দুঃখ-কষ্ট পৌঁছিয়াছে, তখনই ইহার ফলশ্রুতিতে আহমদীদের হৃদয় সবচাইতে অধিক ক্ষতবিক্ষত হইয়াছে। মৌদূদী-পন্থীদের অবস্থাতো এই যে, ভারতে কোটি কোটি মুসলমান, যাহারা পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার চাইতেও অধিক, তাহাদের সম্বন্ধে ইহারা বলিতেছে যে, তাহাদের উপর যুলুম হইলে ইহাদের কিছু যায় আসে না, ইহাদের কর্ণে আদৌ তাহা প্রবেশ করিবে না, ইহাদের আত্ম-মর্যাদাবোধের শিরায় স্পন্দন জাগিবে না, ইহাদের হৃদয় জ্বলিবে না এবং ইহাদের হৃদয়ে রক্ত ঝরিবে না। নিজদিগকে যাহারা উম্মতে মোহাম্মদীয়া বলে, তাহাদের উপর যুলুম হইলে ইহাদের কোন কষ্ট হইবে না, এমনকি মনু শাস্ত্র অনুযায়ী যদি তাহাদের সহিত ম্লেচ্ছের আচরণও করা হয়। অমুসলিম দেশগুলিতে বসবাসরত মুসলমানদের মোট জনসংখ্যার হিসাবও সৈয়দ আতাউল্লাহ শাহ বোখারী সাহেব আদালতে পেশ করেন। সম্মানিত বিচারক ব্যঙ্গোক্তি করিয়া বলেন যে, ইহা আমাদের হিসাব নিকাশ নহে। ইহা তাহার হিসাব নিকাশ। কিন্তু ইহা দ্বারা এই বিষয়টি আন্দাজ করা যাইতে পারে যে, কত বিপুল সংখ্যক মুসলমান অমুসলিম শক্তিগুলির অধীনে বসবাস করিতেছে এবং তাহাদের সহিত যে ভয়ংকর আচরণ করা হইবে, তাহা প্রকৃতপক্ষে ঐ আচরণের প্রতিক্রিয়া হইবে, যাহা মুসলিম রাষ্ট্রগুলিতে অমুসলমানদের সহিত করা হইবে। কিন্তু সৈয়দ আতাউল্লাহ শাহ বোখারী সাহেবের এই ব্যাপারে আদৌ কোন ভাবনা চিন্তা নাই। তিনি আদালতে এই কথা বলেন যে, “অবশিষ্ট ৬৪ কোটি মুসলমানের ভাগ্যের ফয়সালা তাহাদের নিজেদেরকেই করিতে হইবে।” (রিপোর্ট, পৃষ্ঠা–৩২৩)

মোট কথা, তাহাদের বক্তব্য এই যে, ইহাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। আমাদিগকে তো মানবাধিকার নস্যাৎ করার জন্য মনোনীত করা হইয়াছে। আমরাতো তাহা নস্যাৎ করিবই, ইহার দরুন কোটি কোটি মুসলমান অমুসলিম সরকারের অধীনে যুলুম নির্যাতনের লক্ষ্য বস্তুতেই পরিণত হউক না কেন।

আপনার উত্তর যোগ করুন

আপনার উত্তরটি একজন এডমিন রিভিউ করে অনুমোদন করবেন।