ইসলামের শ্রেষ্ঠ মুজাহিদের বিরুদ্ধে জেহাদ রহিতকরণের অভিযোগ সরাসরি একটি অযৌক্তিক অভিযোগ
যদি এই যুক্তিকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করিতে হয় তাহা হইলে ইহার বিভিন্ন দিকের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া বিশ্লেষণ করা উচিত। প্রথমতঃ যদি হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালাম ইংরেজদের স্বার্থে জেহাদ রহিত হওয়ার ঘোষণা করিয়া থাকেন, তাহা হইলে উক্ত স্বার্থ কি ছিল এবং তাঁহার দ্বারা সেই স্বার্থ কিভাবে হাসিল হইয়াছিল? দ্বিতীয়তঃ হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালাম কোন অবস্থায় জেহাদ রহিত হওয়ার কথা ঘোষণা করিয়াছিলেন? ইংরেজরা প্রকৃতপক্ষে কোন কোন বিপদের সম্মুখীন হইয়াছিল? ইহার রাজনৈতিক পটভূমি কি ছিল? এতদ্ব্যতীত আরো অনেক বিষয় রহিয়াছে। এই সকল বিষয়ের প্রত্যেকটি সম্বন্ধে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে আমি অবহিত আছি। ইনশাআল্লাহ, ইহার প্রত্যেকটি দিকের উপর আমি আলোকপাত করিব।
এই ব্যাপারে সর্বপ্রথম তো ইহাই দেখার বিষয় যে, যদি ইংরেজরা হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের দ্বারা জেহাদ রহিত হওয়ার ঘোষণাই করাইয়ে দেয় এবং মুসলমানদিগকে এই ধারণা হইতে বিরতই রাখিবে, তাহা হইলে ইহা অসম্ভব ছিল যে, তাঁহার দ্বারা যুগপৎ এইরূপ দাবীও করাইয়ে দিল, যাহার দরুন গোটা জাতি তাঁহার শত্রু হইয়া গেল। কোথায় ঐ দিন, যখন কিনা আলেমগণ তাঁহাকে শ্রদ্ধা ও প্রশংসাঞ্জলি নিবেদন করিতেছিলেন এবং এই কথা বলিতেছিলেন যে, মুসলিম জাহানে হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের তিরোধানের পর হইতে আজ পর্যন্ত ইসলামে মির্যা সাহেবের মত মহান মুজাহিদ জন্ম গ্রহণ করেন নাই, আর কোথায় তাঁহার ঐ দাবী, যাহার দরুন অকম্মাৎ সব কিছু এমনভাবে পাল্টাইয়া গেল যে, অন্যদের কথা বাদই দেওয়া যাক, তাঁহার নিজের আপনজনেরাও দুশমন হইয়া গেল এবং রক্তের সম্পর্কযুক্ত আত্মীয়রাও রক্তপিপাসু দুশমনে পরিণত হইয়া গেল এবং একটি মাত্র দাবীর সাথে সাথে একই রাত্রিতে সব কিছু এমনভাবে পাল্টাইয়া গেল যে, সমগ্র বিশ্বে তাঁহার (আঃ) একজনও সমর্থনকারী রহিল না।
এইরূপ দাবী করাইয়ে দেওয়ার পর, যাহার দরুন সমগ্র জগত তাঁহার দুশমন হইয়া গেল, ইংরেজদের কি ভরসা রহিল যে হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের কথা লোকেরা মানিবে? অর্থাৎ তাঁহাকে দাঁড় করানো হইতেছে জেহাদ রহিত করণের ঘোষণার জন্য, কিন্তু তাঁহার দ্বারা দাবী করানো হইতেছে উহা, যাহার দরুন ঐ সকল লোক, যাহারা কিছু সম্পর্ক রাখিত, তাহারাও তাঁহার (আঃ) রক্তপিপাসুতে পরিণত হইয়া গেল। যে ধরনের ব্যক্তিরা আজকাল আহমদীয়াতের বিরুদ্ধাচরণ ও দুশমনীতে লিপ্ত রহিয়াছে, তাহাদের পক্ষেই এই ধরনের অজ্ঞতাপূর্ণ কথা বলা সম্ভব। কিন্তু পৃথিবীর কোন যুক্তিবাদী মানুষ এরূপ কথা স্বীকার করিয়া নিতে পারে না। অর্থাৎ তাঁহার (আঃ) হাত দ্বারা ইংরেজরা নিজেদের কৃত্রিম খোদাকে মারিয়া ফেলিল (তিনি প্রমাণ করিয়াছেন যে, খৃষ্টানদের খোদার পুত্র খোদা হযরত ঈসা (আঃ) স্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু বরণ করিয়াছেন এবং তিনি আকাশে স্বশরীরে জীবিত নাই—অনুবাদক) এবং নবী অর্থাৎ উম্মতী নবীর দাবী করাইয়া গোটা মুসলিম জাহানকে তাঁহার দুশমনে পরিণত করিয়া দিল। তাঁহার দ্বারা হযরত বাবা নানক (রহঃ)-এর মুসলমান হওয়ার ঘোষণা করাইয়া দিয়া পাঞ্জাবের চতুষ্পার্শের বসবসকারী সকল শিখকে দুশমনে পরিণত করিয়া দিল। তাঁহাকে আর্যদের মুখোমুখী করাইয়া দিয়া গোটা আর্য সমাজকে দুশমনে পরিণত করিয়া দিল, সনাতন ধর্মীদের মুখোমুখী করাইয়া দিয়া সকল সনাতন ধর্মী হিন্দুকে দুশমনে পরিণত করিয়া দিল, বৌদ্ধদের সম্বন্ধে এইরূপ ঘোষণা করাইয়া দিল, যাহা তাহাদের নিকট গ্রহণযোগ্য ছিল না, জরাথ্রুস্ত্রদের (অগ্নি উপাসক পার্শীদের) সম্বন্ধে এইরূপ ঘোষণা করাইয়া দিল, যাহা তাহাদের নিকট গ্রহণযোগ্য ছিল না, এবং সমগ্র বিশ্বে যত জাতিই নিজদিগকে ধর্মের দিকে আরোপিত করে, তাঁহার (আঃ) দ্বারা তাহাদের সকলকে চ্যালেঞ্জ করাইয়া দিল এবং সকলের সম্বন্ধে এইরূপ কথা বলাইয়া দিল, যাহা সকলের হৃদয়কে তিক্ত করিয়া দিল। এইরূপ দাবীকারককে তো পৃথিবীতে কখনো কেহ দেখে নাই, যিনি নাকি তিক্ত কথা বলেন এবং তাহাতে সকলের কষ্ট হয়, কিন্তু তাঁহার উদ্দেশ্য হইল লোকদিগকে নিজের পশ্চাতে চালানো এবং তাহাদের চিন্তাধারার পরিবর্তন ঘটানো। এই ধরনের ব্যক্তিতো নবী ছাড়া কখনো অন্য কিছু হইতে পারেন না। আপনারা কুরআন করীম খুলিয়া দেখুন। তাহা হইলে অভ্রান্তরূপে দেখিতে পাইবেন যে, নবুওতের ঘটনা ছাড়া এইরূপ ঘটনা কখনো ঘটে না যে, এক ব্যক্তি সমগ্র জগতবাসীকে নিজের দিকে আহ্বান করেন, কিন্তু তিনি দাবী এইরূপ করিয়া বসেন যাহা জগতবাসীর নিকট গ্রহণযোগ্য হয় না। ইহা একটি বাস্তব সত্য যে, প্রত্যেক যুগের সব চাইতে অপ্রিয় ও তিক্ত দাবী হইল এই যে “খোদা আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন।” ইহার ফলশ্রুতিতে স্বজনেরাও এইরূপ দাবী কারককে পরিত্যাগ করিয়া থাকে। সুতরাং হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামকে দিয়া ইংরেজরা এইরূপ দাবী করাইয়া দিল, যাহা এই সকল বিরুদ্ধবাদীদের নিকট কোন মতেই জায়েয নহে। কিন্তু সাথে সাথে ইংরেজরা এই ভরসা রাখে যে, যখন এই ব্যক্তি বলিবে যে, জেহাদের ধারণা পরিত্যাগ কর, তখন সকল মুসলমান জেহাদের ধারণা একদম পরিত্যাগ করিবে এবং ইহাতে ইংরেজ সরকারের সকল মাথাব্যথা শেষ হইয়া যাইবে এবং সকল সমস্যার সমাধান হইয়া যাইবে। কেননা হযরত মির্যা সাহেব (আঃ) জেহাদ রহিত হওয়ার ঘোষণা করিয়া দিয়াছেন। এই জাতীয় কথা এই সকল লোকের আক্কেল–বুদ্ধিতে আসে তো আসুক, কিন্তু কোন যুক্তিবাদী মানুষ এইরূপ উদ্ভট কথা ধারণাও করিতে পারে না।
এই ব্যাপারে সর্বপ্রথম তো ইহাই দেখার বিষয় যে, যদি ইংরেজরা হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের দ্বারা জেহাদ রহিত হওয়ার ঘোষণাই করাইয়ে দেয় এবং মুসলমানদিগকে এই ধারণা হইতে বিরতই রাখিবে, তাহা হইলে ইহা অসম্ভব ছিল যে, তাঁহার দ্বারা যুগপৎ এইরূপ দাবীও করাইয়ে দিল, যাহার দরুন গোটা জাতি তাঁহার শত্রু হইয়া গেল। কোথায় ঐ দিন, যখন কিনা আলেমগণ তাঁহাকে শ্রদ্ধা ও প্রশংসাঞ্জলি নিবেদন করিতেছিলেন এবং এই কথা বলিতেছিলেন যে, মুসলিম জাহানে হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের তিরোধানের পর হইতে আজ পর্যন্ত ইসলামে মির্যা সাহেবের মত মহান মুজাহিদ জন্ম গ্রহণ করেন নাই, আর কোথায় তাঁহার ঐ দাবী, যাহার দরুন অকম্মাৎ সব কিছু এমনভাবে পাল্টাইয়া গেল যে, অন্যদের কথা বাদই দেওয়া যাক, তাঁহার নিজের আপনজনেরাও দুশমন হইয়া গেল এবং রক্তের সম্পর্কযুক্ত আত্মীয়রাও রক্তপিপাসু দুশমনে পরিণত হইয়া গেল এবং একটি মাত্র দাবীর সাথে সাথে একই রাত্রিতে সব কিছু এমনভাবে পাল্টাইয়া গেল যে, সমগ্র বিশ্বে তাঁহার (আঃ) একজনও সমর্থনকারী রহিল না।
এইরূপ দাবী করাইয়ে দেওয়ার পর, যাহার দরুন সমগ্র জগত তাঁহার দুশমন হইয়া গেল, ইংরেজদের কি ভরসা রহিল যে হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের কথা লোকেরা মানিবে? অর্থাৎ তাঁহাকে দাঁড় করানো হইতেছে জেহাদ রহিত করণের ঘোষণার জন্য, কিন্তু তাঁহার দ্বারা দাবী করানো হইতেছে উহা, যাহার দরুন ঐ সকল লোক, যাহারা কিছু সম্পর্ক রাখিত, তাহারাও তাঁহার (আঃ) রক্তপিপাসুতে পরিণত হইয়া গেল। যে ধরনের ব্যক্তিরা আজকাল আহমদীয়াতের বিরুদ্ধাচরণ ও দুশমনীতে লিপ্ত রহিয়াছে, তাহাদের পক্ষেই এই ধরনের অজ্ঞতাপূর্ণ কথা বলা সম্ভব। কিন্তু পৃথিবীর কোন যুক্তিবাদী মানুষ এরূপ কথা স্বীকার করিয়া নিতে পারে না। অর্থাৎ তাঁহার (আঃ) হাত দ্বারা ইংরেজরা নিজেদের কৃত্রিম খোদাকে মারিয়া ফেলিল (তিনি প্রমাণ করিয়াছেন যে, খৃষ্টানদের খোদার পুত্র খোদা হযরত ঈসা (আঃ) স্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু বরণ করিয়াছেন এবং তিনি আকাশে স্বশরীরে জীবিত নাই—অনুবাদক) এবং নবী অর্থাৎ উম্মতী নবীর দাবী করাইয়া গোটা মুসলিম জাহানকে তাঁহার দুশমনে পরিণত করিয়া দিল। তাঁহার দ্বারা হযরত বাবা নানক (রহঃ)-এর মুসলমান হওয়ার ঘোষণা করাইয়া দিয়া পাঞ্জাবের চতুষ্পার্শের বসবসকারী সকল শিখকে দুশমনে পরিণত করিয়া দিল। তাঁহাকে আর্যদের মুখোমুখী করাইয়া দিয়া গোটা আর্য সমাজকে দুশমনে পরিণত করিয়া দিল, সনাতন ধর্মীদের মুখোমুখী করাইয়া দিয়া সকল সনাতন ধর্মী হিন্দুকে দুশমনে পরিণত করিয়া দিল, বৌদ্ধদের সম্বন্ধে এইরূপ ঘোষণা করাইয়া দিল, যাহা তাহাদের নিকট গ্রহণযোগ্য ছিল না, জরাথ্রুস্ত্রদের (অগ্নি উপাসক পার্শীদের) সম্বন্ধে এইরূপ ঘোষণা করাইয়া দিল, যাহা তাহাদের নিকট গ্রহণযোগ্য ছিল না, এবং সমগ্র বিশ্বে যত জাতিই নিজদিগকে ধর্মের দিকে আরোপিত করে, তাঁহার (আঃ) দ্বারা তাহাদের সকলকে চ্যালেঞ্জ করাইয়া দিল এবং সকলের সম্বন্ধে এইরূপ কথা বলাইয়া দিল, যাহা সকলের হৃদয়কে তিক্ত করিয়া দিল। এইরূপ দাবীকারককে তো পৃথিবীতে কখনো কেহ দেখে নাই, যিনি নাকি তিক্ত কথা বলেন এবং তাহাতে সকলের কষ্ট হয়, কিন্তু তাঁহার উদ্দেশ্য হইল লোকদিগকে নিজের পশ্চাতে চালানো এবং তাহাদের চিন্তাধারার পরিবর্তন ঘটানো। এই ধরনের ব্যক্তিতো নবী ছাড়া কখনো অন্য কিছু হইতে পারেন না। আপনারা কুরআন করীম খুলিয়া দেখুন। তাহা হইলে অভ্রান্তরূপে দেখিতে পাইবেন যে, নবুওতের ঘটনা ছাড়া এইরূপ ঘটনা কখনো ঘটে না যে, এক ব্যক্তি সমগ্র জগতবাসীকে নিজের দিকে আহ্বান করেন, কিন্তু তিনি দাবী এইরূপ করিয়া বসেন যাহা জগতবাসীর নিকট গ্রহণযোগ্য হয় না। ইহা একটি বাস্তব সত্য যে, প্রত্যেক যুগের সব চাইতে অপ্রিয় ও তিক্ত দাবী হইল এই যে “খোদা আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন।” ইহার ফলশ্রুতিতে স্বজনেরাও এইরূপ দাবী কারককে পরিত্যাগ করিয়া থাকে। সুতরাং হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামকে দিয়া ইংরেজরা এইরূপ দাবী করাইয়া দিল, যাহা এই সকল বিরুদ্ধবাদীদের নিকট কোন মতেই জায়েয নহে। কিন্তু সাথে সাথে ইংরেজরা এই ভরসা রাখে যে, যখন এই ব্যক্তি বলিবে যে, জেহাদের ধারণা পরিত্যাগ কর, তখন সকল মুসলমান জেহাদের ধারণা একদম পরিত্যাগ করিবে এবং ইহাতে ইংরেজ সরকারের সকল মাথাব্যথা শেষ হইয়া যাইবে এবং সকল সমস্যার সমাধান হইয়া যাইবে। কেননা হযরত মির্যা সাহেব (আঃ) জেহাদ রহিত হওয়ার ঘোষণা করিয়া দিয়াছেন। এই জাতীয় কথা এই সকল লোকের আক্কেল–বুদ্ধিতে আসে তো আসুক, কিন্তু কোন যুক্তিবাদী মানুষ এইরূপ উদ্ভট কথা ধারণাও করিতে পারে না।
আপনার উত্তর যোগ করুন
আপনার উত্তরটি একজন এডমিন রিভিউ করে অনুমোদন করবেন।