আপত্তির জবাব

জেহাদের ভ্রান্ত ধারণা ইসলামের জন্য নেহায়েত বিপজ্জনক ছিল

ইহা হইল হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের “জেহাদ রহিতকরণ”। আরো শুনুন, কোন্‌ বস্তুকে তিনি (আঃ) হারাম সাব্যস্ত করিয়াছেন এবং কোন কোন বস্তুর বিরুদ্ধে তিনি (আঃ) জেহাদের ঝাণ্ডা উঁচু করিয়াছেন। ইহা সুস্পষ্ট যে, জেহাদ সম্বন্ধে কোন কোন জাহেল আলেম এবং পাদ্রীর ভ্রান্ত ধারনার ফলশ্রুতিতে ইসলামের কোন উপকারই হয় নাই, কেননা তাহাদের মধ্যে যুদ্ধ করার কোন শক্তিই ছিল না। হাঁ, ইহার দরুন ক্ষতির অনেক আশংকা ও বিপদ ছিল, যাহা তাহাদিগকে চারিদিক হইতে ঘিরিয়া রাখিয়াছিল। হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালাম বলেন:

“সুবহানাল্লাহ! ঐ সকল লোক কিরূপ খাঁটি ছিলেন। তাহারা নবীগণের রুহ্ নিজেদের মধ্যে ধারণ করিতেন। যখন খোদা মক্কায় তাহাদিগকে এই আদেশ দিলেন যে, যদি তোমাদিগকে টুকরা টুকরা করিয়া ফেলা হয় তথাপি তোমরা অন্যায়ের মোকাবেলা করিবে না। তাহারা এই আদেশ পাইয়া দুগ্ধপোষ্য শিশুর ন্যায় বিনম্র ও দুর্বল হইয়া গেল, কেননা তাহাদের হাতে জোর ছিল না এবং বাহুতে শক্তি ছিল না। তাহাদের মধ্যে কাউকে কাউকে এইভাবে হত্যা করা হইয়াছিল যে, দুইটি উটকে এক জায়গায় দাঁড় করাইয়া তাহাদের পা শক্ত করিয়া এই উটের সহিত বাঁধিয়া দেওয়া হইল। অতঃপর উট দুইটিকে বিপরীত দিকে দৌড়ানো হইল। সুতরাং তাহারা এক মুহূর্তে এইরূপে চিরিয়া গেল যেরূপে গাঁজর বা মুলাকে চিরা হয়। কিন্তু আফসোস, মুসলমানেরা এবং বিশেষভাবে মৌলবীরা এই সকল ঘটনাকে উপেক্ষা করিয়াছে এবং এখন তাহারা মনে করে, সমগ্র বিশ্ব যেন তাহাদের শিকার এবং যেভাবে একজন শিকারী কোন বনে একটি হরিণ দেখিতে পাইয়া চুপিসারে ইহার দিকে অগ্রসর হয় এবং অবশেষে সুযোগ মত বন্দুকের গুলি ছোড়ে; আজ অধিকাংশ মৌলবীর এই অবস্থাই হইয়াছে। ইহারা মানুষের প্রতি সহানুভূতির শিক্ষা হইতে এক অক্ষরও কখনো পাঠ করেনাই, বরং ইহারা একজন অসতর্ক মানুষের উপর পিস্তল বা বন্দুক চালানোকে ইসলাম মনে করিতেছে।”

“ঐ সকল লোক কোথায়, যাহারা সাহাবাগণের (রাঃ) মত মার খাইয়াছে এবং সবুর করিয়াছে? খোদা কি আমাদিগকে এই আদেশ দিয়াছেন যে, আমরা কোন অপরাধের প্রমাণ ছাড়াই এইরূপ মানুষ যাহাকে আমরা চিনি না এবং না সে আমাদেরকে চিনে, তাহাকে অসতর্ক অবস্থায় পাইয়া খামাখা ছুরি দ্বারা তাহাকে টুকরা টুকরা করিয়া ফেলি বা বন্দুক দ্বারা তাহাকে শেষ করিয়া দেই? এইরূপ ধর্ম কি খোদার তরফ হইতে প্রেরিত হইতে পারে, যাহা এই কথা শিক্ষা দেয় যে অকারণে খোদার নিস্পাপ, নিরপরাধ এবং বে-তবলীগ (যাহাদের নিকট ইসলাম প্রচার করা হয় নাই) বান্দাদিগকে হত্যা করিতে থাক এবং ইহার ফলে বেহেশতে ঢুকিয়া পড়িবে? ইহা পরিতাপের বিষয় এবং লজ্জাস্কর ব্যাপার যে, এক ব্যক্তি, যাহার সহিত আমাদের কোন পুরাতন শত্রুতাও নাই, বরং কোন আলাপ পরিচয়ই নাই, সে কোন দোকানে নিজ ছেলেমেয়েদের জন্য কোন জিনিষ খরিদ করিতেছে বা নিজের অন্য কোন বৈধ কাজে নিয়োজিত রহিয়াছে, কিন্তু আমরা বিনা কারণে তাহার উপর পিস্তল চালাইয়া এক মুহুর্তে তাহার স্ত্রীকে বিধবা করিয়া দিলাম এবং তাহার সন্তানদিগকে এতিম করিয়া দিলাম এবং তাহার গৃহকে শোকের আখড়ায় পরিণত করিয়া দিলাম। এই বিধান কোন্ হাদিসে লিখিত আছে? কোন মৌলবী কি আছে, যে ইহার উত্তর দিবে? নির্বোধেরা জেহাদের নাম শুনিয়া এই অজুহাতে নিজেদের প্রবৃত্তির উত্তেজনাকে পূর্ণ করিতে চাহিল।” (গভর্ণমেন্ট আংরেজী আওর জেহাদ, পৃষ্ঠা ১২–১৩)

আপনার উত্তর যোগ করুন

আপনার উত্তরটি একজন এডমিন রিভিউ করে অনুমোদন করবেন।