আপত্তির জবাব

ভারতবর্ষ ‘দারুল ইসলাম’ হওয়া সম্বন্ধে ফত্‌ওয়া

সুরেশ কাশ্মিরী সাহেব, যিনি আহমদীদের কঠোর শত্রুদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন, তিনি “সৈয়দ আতাউল্লাহ শাহ বোখারী” নামক পুস্তকের ১৩১ নম্বর পৃষ্ঠায় এই কথা স্বীকার করিয়া লইতে বাধ্য হইয়াছেন যে:-

“মক্কা মোয়ায্‌যমার হানাফী মুফতী জামান দীনের নিকট, শেখ উমর, মক্কা মোয়ায্‌যমার শাফী মুফতী আহমদ বিন জেহেনী এবং মক্কার মালেকী মুফতী হোসাইন বিন ইব্রাহিমের নিকট হইতেও ফত্‌ওয়া আনা হইয়াছিল। এই সকল ফতুয়ায় ভারতবর্ষকে ‘দারুল ইসলাম’ ঘোষণা দেওয়া হইয়াছিল।”

তাহা হইলে আর কোন কথা বাকী রহিয়া গেল? এই বিষয়ে আর কোথাকার মৌলবীকে বলিতে হইবে? মৌলবী মওদুদী “হকিকতে জেহাদ” (অর্থাৎ জেহাদের তাৎপর্য) নামক একটি পুস্তক লিখিয়াছেন এবং তিনি তাহার আরো কোন কোন পুস্তকে জেহাদ সম্বন্ধে এইরূপ শিক্ষা দিয়াছেন, যাহা কোন কাণ্ড-জ্ঞান সম্পন্ন মুসলমান ধারনাও করিতে পারে না যে, আঁ-হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের পক্ষ হইতে জেহাদ সম্বন্ধে এইরূপ জালেমানা চিন্তাভাবনার প্রকাশ হইতে পারে। জেহাদ সম্বন্ধে কট্টর দৃষ্টিভঙ্গী পোষণকারী বর্তমানে মৌলবী মওদুদীই রহিয়াছেন (অর্থাৎ তিনিতো নিজে মারা গিয়াছেন, কিন্তু বর্তমানে তাহার ফেরকা তাহার কথা মানিতেছে)। হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের যুগের ভারতবর্ষ সম্বন্ধে মৌলবী মওদুদী তাহার পুস্তক “সুদ” প্রথম খণ্ডে এই বিষয় সম্বন্ধে বলেন:-

“ভারতবর্ষ ঐ সময় নিঃসন্দেহে ‘দারুল হরব’ (যেখানে তলোয়ারের যুদ্ধ জায়েজ) ছিল, যখন ইংরেজ সরকার এখানে ইসলামী সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করার জন্য চেষ্টা করিতেছিল।”

(আহমদীয়া জামা’তের শিক্ষাও অবিকল ইহাই যে, যখন কোন বহিরাগত প্রথমে আক্রমণ করে তখন তাহাদের সহিত যুদ্ধ কর, নিজেদের মান-ইজ্জত রক্ষা কর, নিজেদের ধন-সম্পদ রক্ষা কর, নিজেদের ধর্ম রক্ষা কর এবং যদি একটি শিশুও টুকরা টুকরায় মরিয়া যায়, তবুও আত্মসমর্পন করিবে না। এই সময়টা হইল ‘দারুল হরব’। এই সময় প্রত্যেক প্রকারের প্রতিরক্ষাকে ইসলামী জেহাদ বলা যাইতে পারে। বস্তুতঃ মৌলবী মওদুদীও এই কথাই বলিতেছিলেন।)

ঐ সময় মুসলমানদের উপর ফরজ ছিল যে, তাহারা ইসলামী সাম্রাজ্যকে রক্ষা করার জন্য জীবন উৎসর্গ করে, অথবা এতে ব্যর্থ হইলে এ স্থান হইতে হিজরত করে। কিন্তু যখন তাহারা পরাজিত হইয়া গেল এবং ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হইয়া গেল এবং মুসলমানেরা নিজেদের ‘পারসোনাল ল’ আমল করার স্বাধীনতাসহ এস্থানে বসবাস করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিল, তখন এই দেশ ‘দারুল হরব’ রহিল না।” (সুদ, প্রথম অংশ, পৃষ্ঠা ৭৭–৭৮; টিকা জামাতে ইসলামী, লাহোরের গ্রন্থাগার কর্তৃক প্রকাশিত)

আপনার উত্তর যোগ করুন

আপনার উত্তরটি একজন এডমিন রিভিউ করে অনুমোদন করবেন।