খাতামান্নাবিঈন ও আহ্মদীয়া মুসলিম জামা’ত
بسم الله الرحمن ال حِيم
খাতামান্নবীঈন ও আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত
আহমদীয়া মুসলিম জামা'ত আর বাহাত্তরটি ফিরকার মত ইসলামেরই একটি ফিরকা। কলেমা, নামায, রোযা, যাকাত ও হজ্জ আমরা যথাযথভাবে মানি ও পালন করার আপ্রাণ চেষ্টা করি। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ’ আমাদের কলেমা। পবিত্র কুরআন, সুন্নত ও হাদীস আমরা মান্য করি। এতদ্ সত্ত্বেও একটি চিহ্নিত মহল আমাদের বিরুদ্ধে একথা প্রচার করে বেড়াচ্ছে যে, আমরা নাকি বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সাঃ)-কে ‘খাতামুন্নবীঈন’ মানি না। নাউযুবিল্লাহে মিন যালেকা।
আল্লাহর কসম! আহমদী মুসলমানগণ হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সাঃ)-কে মনে প্রাণে ‘খাতামুন্নবীঈন’ বলে বিশ্বাস করে। কেননা স্বয়ং খোদাতা’লা সূরা আহযাবে তাঁকে এই উপাধি প্রদান করেছেন। আমাদের বিশ্বাস হলো, যে ব্যক্তি কুরআনে বর্ণিত কোন একটি শব্দ বা একটি অক্ষরও অস্বীকার করে সে আল্লাহর কথা অমান্যকারী। আহমদীরা কেবল মুখে মুখেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে ‘খাতামুন্নবীঈন’ বলে মানে না বরং এর মাঝে নিহিত গভীর মাহাত্ম্য ও তাৎপর্যও উপলব্ধি করে থাকে।
এ প্রসঙ্গে আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের পবিত্র প্রতিষ্ঠাতা হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আঃ) বলেন: ‘আমার এবং আমার জামা’তের উপর অভিযোগ করা হয় যে, আমরা রসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়াসাল্লামকে ‘খাতামুন্নাবীঈন’ বলে বিশ্বাস করি না-ইহা আমাদের উপর ডাহা মিথ্যা অপবাদ বৈ আর কিছুই নয়। আমরা যে জোর, যে দৃঢ়বিশ্বাস ও যে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে আঁ-হযরত সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া-সাল্লামকে খাতামাল আম্বিয়া বলে মানি ও বিশ্বাস করি, তার শত ভাগের এক ভাগও অপরাপর লোকেরা মানেন না এবং ঐরূপে মানার মত তাদের সেই হৃদয়, ক্ষমতা ও যোগ্যতাও নেই। খাতামাল আম্বিয়া (সাঃ)-এর ‘খতমে নবুওয়তের’ মধ্যে যে প্রগাঢ় সত্য, তত্ত্ব এবং রহস্য নিহিত রয়েছে তা তারা বুঝেনই না। তারা কেবল বাপ-দাদাদের কাছ থেকে একটি শব্দ গুচ্ছই শুনে রেখেছেন; কিন্তু এর প্রকৃত তত্ত্ব ও হকীকত সম্বন্ধে অনভিজ্ঞ। তারা জানেন না যে, ‘খতমে নবুওয়ত’ বিষয়টি কি; এর উপর ঈমান আনয়নের মর্ম কি? কিন্তু আল্লাহতা’লা উত্তমরূপে অবগত আছেন যে, আমরা পরিপূর্ণ, সন্দেহাতীত জ্ঞান ও অন্তর্দৃষ্টির ভিত্তিতে আঁ-হযরত সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়াসাল্লামকে ‘খাতামান্নবীঈন’ বলে বিশ্বাস করি। খোদাতা’লা আমাদের নিকট খতমে নবুওয়তের প্রকৃত তত্ত্ব এরূপ প্রাঞ্জলভাবে খুলে দিয়েছেন এবং এর ইরফান (গভীর তত্ত্বজ্ঞান)-এর এমনি সুপেয় শরবত পান করিয়েছেন যে, তাতে এক অনুপম স্বাদ লাভ করে থাকি যা অন্য কেউ অনুমানও করতে পারে না; অবশ্য ঐ সকল লোক ব্যতীত যাঁরা এই উৎস থেকে পান করে তৃপ্ত হয়েছেন।” (মলফুযাতঃ ১ম খণ্ড, পৃঃ ৩৪২)
এবার বিষয়টি একটু বিস্তারিতভাবে যাঁচাই করা যাক। যারা আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে থাকেন তারা ‘খাতামুন্নবীঈন’ শব্দের অর্থ করেন ‘শেষ নবী’। কিন্তু তারা নিজেরাই আবার এর উল্টো বিশ্বাস পোষণ করেন। একদিকে তারা ঘোষণা দেন যে, মহানবী (সাঃ) শেষ নবী আবার তারাই বিশ্বাস করেন যে, আখেরী যুগে ইসলামকে পুনর্জীবিত ও পুনর্বাসিত করার জন্য হযরত ঈসা নবীউল্লাহ আগমন করবেন। তাহলে চিন্তা করে দেখুন শেষ নবী কে হলেন? যিনি পূর্বে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি শেষ নবী, না যিনি পরে মৃত্যুবরণ করবেন তিনি।
খাতামান্নবীঈন ও আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত
আহমদীয়া মুসলিম জামা'ত আর বাহাত্তরটি ফিরকার মত ইসলামেরই একটি ফিরকা। কলেমা, নামায, রোযা, যাকাত ও হজ্জ আমরা যথাযথভাবে মানি ও পালন করার আপ্রাণ চেষ্টা করি। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ’ আমাদের কলেমা। পবিত্র কুরআন, সুন্নত ও হাদীস আমরা মান্য করি। এতদ্ সত্ত্বেও একটি চিহ্নিত মহল আমাদের বিরুদ্ধে একথা প্রচার করে বেড়াচ্ছে যে, আমরা নাকি বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সাঃ)-কে ‘খাতামুন্নবীঈন’ মানি না। নাউযুবিল্লাহে মিন যালেকা।
আল্লাহর কসম! আহমদী মুসলমানগণ হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সাঃ)-কে মনে প্রাণে ‘খাতামুন্নবীঈন’ বলে বিশ্বাস করে। কেননা স্বয়ং খোদাতা’লা সূরা আহযাবে তাঁকে এই উপাধি প্রদান করেছেন। আমাদের বিশ্বাস হলো, যে ব্যক্তি কুরআনে বর্ণিত কোন একটি শব্দ বা একটি অক্ষরও অস্বীকার করে সে আল্লাহর কথা অমান্যকারী। আহমদীরা কেবল মুখে মুখেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে ‘খাতামুন্নবীঈন’ বলে মানে না বরং এর মাঝে নিহিত গভীর মাহাত্ম্য ও তাৎপর্যও উপলব্ধি করে থাকে।
এ প্রসঙ্গে আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের পবিত্র প্রতিষ্ঠাতা হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আঃ) বলেন: ‘আমার এবং আমার জামা’তের উপর অভিযোগ করা হয় যে, আমরা রসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়াসাল্লামকে ‘খাতামুন্নাবীঈন’ বলে বিশ্বাস করি না-ইহা আমাদের উপর ডাহা মিথ্যা অপবাদ বৈ আর কিছুই নয়। আমরা যে জোর, যে দৃঢ়বিশ্বাস ও যে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে আঁ-হযরত সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া-সাল্লামকে খাতামাল আম্বিয়া বলে মানি ও বিশ্বাস করি, তার শত ভাগের এক ভাগও অপরাপর লোকেরা মানেন না এবং ঐরূপে মানার মত তাদের সেই হৃদয়, ক্ষমতা ও যোগ্যতাও নেই। খাতামাল আম্বিয়া (সাঃ)-এর ‘খতমে নবুওয়তের’ মধ্যে যে প্রগাঢ় সত্য, তত্ত্ব এবং রহস্য নিহিত রয়েছে তা তারা বুঝেনই না। তারা কেবল বাপ-দাদাদের কাছ থেকে একটি শব্দ গুচ্ছই শুনে রেখেছেন; কিন্তু এর প্রকৃত তত্ত্ব ও হকীকত সম্বন্ধে অনভিজ্ঞ। তারা জানেন না যে, ‘খতমে নবুওয়ত’ বিষয়টি কি; এর উপর ঈমান আনয়নের মর্ম কি? কিন্তু আল্লাহতা’লা উত্তমরূপে অবগত আছেন যে, আমরা পরিপূর্ণ, সন্দেহাতীত জ্ঞান ও অন্তর্দৃষ্টির ভিত্তিতে আঁ-হযরত সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়াসাল্লামকে ‘খাতামান্নবীঈন’ বলে বিশ্বাস করি। খোদাতা’লা আমাদের নিকট খতমে নবুওয়তের প্রকৃত তত্ত্ব এরূপ প্রাঞ্জলভাবে খুলে দিয়েছেন এবং এর ইরফান (গভীর তত্ত্বজ্ঞান)-এর এমনি সুপেয় শরবত পান করিয়েছেন যে, তাতে এক অনুপম স্বাদ লাভ করে থাকি যা অন্য কেউ অনুমানও করতে পারে না; অবশ্য ঐ সকল লোক ব্যতীত যাঁরা এই উৎস থেকে পান করে তৃপ্ত হয়েছেন।” (মলফুযাতঃ ১ম খণ্ড, পৃঃ ৩৪২)
এবার বিষয়টি একটু বিস্তারিতভাবে যাঁচাই করা যাক। যারা আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে থাকেন তারা ‘খাতামুন্নবীঈন’ শব্দের অর্থ করেন ‘শেষ নবী’। কিন্তু তারা নিজেরাই আবার এর উল্টো বিশ্বাস পোষণ করেন। একদিকে তারা ঘোষণা দেন যে, মহানবী (সাঃ) শেষ নবী আবার তারাই বিশ্বাস করেন যে, আখেরী যুগে ইসলামকে পুনর্জীবিত ও পুনর্বাসিত করার জন্য হযরত ঈসা নবীউল্লাহ আগমন করবেন। তাহলে চিন্তা করে দেখুন শেষ নবী কে হলেন? যিনি পূর্বে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি শেষ নবী, না যিনি পরে মৃত্যুবরণ করবেন তিনি।
এপর্যায়ে কোন কোন আলেম বলে থাকেন যে, হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আঃ) যখন দ্বিতীয়বার আগমন করবেন তখন তিনি নবী হবেন না বরং কেবল উম্মতী হয়ে আসবেন। তাই ‘উম্মতী ঈসা’র আগমনে শেষ নবীর ‘শেষত্বে’ কোনরূপ তারতম্য ঘটে না। একথার কোন ভিত্তি নেই। ঈসা (আঃ) আল্লাহর পবিত্র নবী ছিলেন। স্বয়ং সর্বজ্ঞানী আল্লাহ্ তাঁকে নবুওয়ত প্রদান করেছিলেন। নবুওয়ত প্রদানের পর কোন, দোষে হযরত ঈসাকে নবুওয়ত থেকে বঞ্চিত করা হবে? কোরআন ও হাদীসে এর কোন দৃষ্টান্ত আছে কি? উলামাদের অবস্থা দেখুন। তারা কিভাবে অজ্ঞতাপ্রসূত ধ্যান ধারণা প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। সবচেয়ে বড় নবী, সত্যবাদীদের মধ্যে সবচেয়ে সত্যবাদী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সাঃ) এই উম্মতের সংশোধনের জন্য আগমনকারী ঈসা ইবনে মরিয়ম (আঃ)-কে একই হাদীসের মধ্যে চার চার বার ‘নবীউল্লাহ ঈসা’ অর্থাৎ আল্লাহর নবী ঈসা বলে উল্লেখ করেছেন [দেখুনঃ সহীহ মুসলিম শরীফ, কিতাবুল ফিতন, বাব যিকরুদ্দাজ্জালা]। কোন মুসলমান রসূলে পাক (সাঃ)-এর কথার বিপরীতে কোন আলেম উলামাদের কথা গ্রহণ করতে পারে কি? সুতরাং উরোক্ত সন্দেহ অবসান করার পর বিরুদ্ধবাদী উলামাদের কাছে আমাদের একই প্রশ্ন যে, সহীহ মুসলিম শরীফের হাদীস অনুযায়ী খাতামুন্নবীঈন এর পরে ঈসা নবীউল্লাহর দ্বিতীয় আগমন যখন স্বীকৃত তবে ‘শেষ নবী’ কে হলেন? বা কে হবেন?
এ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে না পেরে অনেকে এক উদ্ভট পন্থা আবিস্কার করেছেন। আর তা হলো ‘খাতামুন্নবীঈন’ শব্দের অর্থ এখন থেকে ‘নতুন নবীদের শেষকারী’। অর্থাৎ রসুল করীম (সাঃ)-এর পরে নতুন কোন নবী আসতে পারেন না কিন্তু অতীতের নবী আসতে পারেন। কুরআনের একি অপব্যাখ্যা। ইসলাম ধর্ম হেলাফেলার বিষয় নয়। আমাদের প্রশ্ন হলো ‘নতুন’ শব্দটি পেলেন কোথায়? শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে কেবল দু’টি। একটি হচ্ছে ‘খাতাম’; এর অর্থ বলা হয় সর্বশেষ। দ্বিতীয়টি হলো ‘নবীঈন’ অর্থাৎ নবীগণের। এমন কোন তৃতীয় শব্দ এখানে নেই যার অনুবাদ ‘নতুন’ করা যেতে পারে। কুরআনের মধ্যে ‘তাহরীফ’ (পরিবর্তন/পরিবর্ধন/শব্দ স্থানান্তর) করা জায়েয কি? মনে রাখবেন, আল্লাহ্র গ্রন্থে ‘তাহরীফ’ করা ইহুদী উলামাদের খাসলত। ততটুকু বলুন ও পালন করুন যতটুকু আল্লাহ্ পাক বলেছেন।
এ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে না পেরে অনেকে এক উদ্ভট পন্থা আবিস্কার করেছেন। আর তা হলো ‘খাতামুন্নবীঈন’ শব্দের অর্থ এখন থেকে ‘নতুন নবীদের শেষকারী’। অর্থাৎ রসুল করীম (সাঃ)-এর পরে নতুন কোন নবী আসতে পারেন না কিন্তু অতীতের নবী আসতে পারেন। কুরআনের একি অপব্যাখ্যা। ইসলাম ধর্ম হেলাফেলার বিষয় নয়। আমাদের প্রশ্ন হলো ‘নতুন’ শব্দটি পেলেন কোথায়? শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে কেবল দু’টি। একটি হচ্ছে ‘খাতাম’; এর অর্থ বলা হয় সর্বশেষ। দ্বিতীয়টি হলো ‘নবীঈন’ অর্থাৎ নবীগণের। এমন কোন তৃতীয় শব্দ এখানে নেই যার অনুবাদ ‘নতুন’ করা যেতে পারে। কুরআনের মধ্যে ‘তাহরীফ’ (পরিবর্তন/পরিবর্ধন/শব্দ স্থানান্তর) করা জায়েয কি? মনে রাখবেন, আল্লাহ্র গ্রন্থে ‘তাহরীফ’ করা ইহুদী উলামাদের খাসলত। ততটুকু বলুন ও পালন করুন যতটুকু আল্লাহ্ পাক বলেছেন।
এবার ভিন্ন আঙ্গিকে বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। কুরআন শরীফে আল্লাহতা’লা আমাদেরকে অর্থাৎ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উম্মতকে নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে “সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত” বলে আখ্যা দান করেছেন। বলেছেনঃ کنتم خير امة اخرجت للناس تامرون بالمعروف وتنهون عن المنكر و تؤمنون بالله ط অর্থাৎ তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে; তোমরা সৎ কার্যের নির্দেশ দান কর, অসৎ কার্যের নিষেধ কর এবং আল্লাহে বিশ্বাস কর (সূরা আলে ইমরানঃ ১১১ আয়াত)। অপর দিকে রসুলে পাক (সাঃ) বহু হাদীসে মুসলমানদের অবক্ষয়, অধঃপতন ও আধ্যাত্মিক বিপর্যয়ের কথা বার বার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। তিনি বলেছেন, তথাকথিত উলামাদের অবক্ষয়ের কারণে আমার উম্মত ৭৩ ভাগে ভাগ হয়ে যাবে। তিনি আবার বলেছেন তারা ইহুদীদের রূপ ধারণ করবে। হুযুর (সাঃ) আরও বলেছেনঃ আমার উম্মতের মধ্যে তিরিশজন মিথ্যাবাদী বড় ধোকাবাজের জন্ম হবে (দেখুন তিরমিযী শরীফ, কিতাবুল ঈমান, মিশকাত শরীফ প্রভৃতি) প্রশ্ন সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মতের কি এটিই বৈশিষ্ট্য যে, এর মাঝে কেবল আধ্যাত্মিক রোগ-ব্যধি দেখা দিবে আর দলাদলির উদ্ভব হবে অথচ কোন উদ্ধারকর্তা আসবেন না? কোন উত্তম মিষ্টি ফল এগাছে ধরবে না? এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকে বলেন যে, কুরআন সুন্নতের উপর সঠিকভাবে আমল করলেই আমরা উদ্ধার লাভ করবো তথা ‘সালেহ’ হয়ে যাবো। একাজে বাধা কোথায়? এটি অতি উত্তম কথা! বলি, কুরআন, সুন্নত ও হাদীস বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও কি মুসলমানরা অধঃপতনের শিকার হয় নি? ৭২ ভাগে ভাগ হয় নি?
আবার অনেকে বলেন, ‘নায়েবে রসূল’ মৌলানাদের দ্বারা মুসলমানরা সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মতের গৌরব ফিরে পাবে। চমৎকার! আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে ‘নায়েবে রসূল’দের সংখ্যা কম ছিল; এতদসঙ্গে কম ছিল পাপের পরিমাণ। আর আজ নায়েবে রসূলদের ছড়াছড়ি আর মুসলমানদের মাঝে পাপের বন্যা অবারিতভাবে বয়ে যাচ্ছে। স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে যে, পাপের প্লাবন রোধ করা তথাকথিত মৌলানাদের সাধ্যের বাইরে। এমতাবস্থায় সমস্যাটির সমাধান কি?
প্রকৃতপক্ষে কুরআন শরীফ এই আধ্যাত্মিক অবক্ষয়ের মহামারীর সমাধান ১৪০০ বছর পূর্বেই প্রদান করেছে। সূরা নিসার ৯ম রুকুতে আল্লাহতা'লা বলেছেন: “এবং যে-ব্যক্তিই আল্লাহতা’লার এবং মুহাম্মদ রসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর আনুগত্য ও অনুবর্তিতা করবে তারা ঐ সকল লোকদের দলভুক্ত হবে যাদেরকে খোদাতা’লা পুরস্কারে ভূষিত করেছেন, অর্থাৎ নবীদের দলে, সিদ্দীকদের দলে, শহীদদের দলে এবং সালেহীনের দলে। এবং এই সকল লোক সর্বোত্তম সাথী। এটা আল্লাহতা’লার পক্ষ থেকে এক বিশেষ ফযল (অনুগ্রহ) এবং আল্লাহতা’লা সকল বিষয় সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।” এখন অতি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হলো যে, এই উম্মতের জন্য আধ্যাত্মিকতার চারটি নেয়ামতের দুয়ারই উন্মুক্ত আছে। অর্থাৎ উম্মতে মুহাম্মদীয়ার খাঁটি অনুসারীগণ সালেহ, শহীদ, সিদ্দীক এবং যুগের প্রয়োজন ও আল্লাহর মনোনয়ন সাপেক্ষে আনুগত্যকারী উম্মতী নবীও হতে পারেন। শর্ত হচ্ছে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল (সাঃ)-এর পূর্ণ আনুগত্য করতে হবে। এই আধ্যাত্মিক মর্যাদা রসুলুল্লাহর পূর্ববর্তী কোন নবীকে দেয়া হয়নি। সুতরাং এই আয়াতটি একদিকে যেমন হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সাঃ)-এর অভূতপূর্ব পদমর্যাদা ও মাকাম বর্ণনা করে অপরদিকে তেমনি উলামাদের আরোপিত ‘খাতামুন্নবীঈন’ শব্দের অর্থকে ভুল সাব্যস্ত করে।
কুরআন শরীফ একটি পূর্ণাঙ্গ কিতাব। ইউফাস্সেরু বা’যুহু বা’য - এর এক অংশ অপর অংশের ব্যাখ্যা প্রদান করে। ‘খাতামুন্নবীঈনের’ যা-ই অর্থ করা হোক না কেন তা পবিত্র কুরআনের অপর আয়াতের মর্মবিরোধী হতে পারে না। কুরআন পাকে আল্লাহতা’লা মানবজাতিকে সম্বোধন করে মনোনীত মহাপুরুষ প্রেরণ করার পথ খোলা থাকার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন; “হে আদম-সন্তানগণ! যদি তোমাদের কাছে তোমাদেরই মধ্য থেকে আমার রসূলগণ আসেন, যারা আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে শুনান, তাহলে যারাই তাক্ওয়া (খোদাভীতি) এবং সংশোধন ব্যবস্থাকে অবলম্বন করবে, তাদের ভবিষ্যতের জন্য কোন ভয় থাকবে না। এবং তারা বিগত কৃতকর্মের জন্যেও দুঃখিত হবে না”। (সূরা আল-আ'রাফ, রুক-৪)
এই আয়াতটি স্বয়ং নবী করীম (সাঃ)-এর উপর নাযিল হয়েছে। এর মাধ্যমে আল্লাহতা’লা মুসলমানদেরকে সম্বোধন করে বলেছেন যে, যখনই আল্লাহর প্রেরিত কোন মানুষ তোমাদের নিকট আগমন করেন তখন তাঁকে যারা মানবে এবং নিজেদের সংশোধন করবে তাঁদের কোন ভয় ও দুঃখ নেই। যদি রসূলে পাক (সাঃ) শরীয়তবিহীন ও শরীয়ত বাহক উভয় ধরনের নবীদের সর্বশেষ হয়ে থাকেন তাহলে আলোচ্য আয়াতে বর্ণিত শিক্ষা আমাদেরকে দেয়ার তাৎপর্য কি? আমরা কি এই আয়াতের সম্বোধিত জাতি নই? আমরা কি আদম সন্তান নই? আহমদীরা বলে, অবশ্যই আমরা এই আয়াতের সম্বোধিত জাতি। যুগের চরম অবনতির সময়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত পুরুষ আসতে পারেন কিন্তু শর্ত হলো তাঁকে উম্মতী অর্থাৎ শরীয়তে মুহাম্মদীয়ার এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পূর্ণ আনুগত্যকারী হতেই হবে (দেখুন: সূরা নিসাঃ ৭০)
প্রকৃতপক্ষে কুরআন শরীফ এই আধ্যাত্মিক অবক্ষয়ের মহামারীর সমাধান ১৪০০ বছর পূর্বেই প্রদান করেছে। সূরা নিসার ৯ম রুকুতে আল্লাহতা'লা বলেছেন: “এবং যে-ব্যক্তিই আল্লাহতা’লার এবং মুহাম্মদ রসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর আনুগত্য ও অনুবর্তিতা করবে তারা ঐ সকল লোকদের দলভুক্ত হবে যাদেরকে খোদাতা’লা পুরস্কারে ভূষিত করেছেন, অর্থাৎ নবীদের দলে, সিদ্দীকদের দলে, শহীদদের দলে এবং সালেহীনের দলে। এবং এই সকল লোক সর্বোত্তম সাথী। এটা আল্লাহতা’লার পক্ষ থেকে এক বিশেষ ফযল (অনুগ্রহ) এবং আল্লাহতা’লা সকল বিষয় সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।” এখন অতি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হলো যে, এই উম্মতের জন্য আধ্যাত্মিকতার চারটি নেয়ামতের দুয়ারই উন্মুক্ত আছে। অর্থাৎ উম্মতে মুহাম্মদীয়ার খাঁটি অনুসারীগণ সালেহ, শহীদ, সিদ্দীক এবং যুগের প্রয়োজন ও আল্লাহর মনোনয়ন সাপেক্ষে আনুগত্যকারী উম্মতী নবীও হতে পারেন। শর্ত হচ্ছে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল (সাঃ)-এর পূর্ণ আনুগত্য করতে হবে। এই আধ্যাত্মিক মর্যাদা রসুলুল্লাহর পূর্ববর্তী কোন নবীকে দেয়া হয়নি। সুতরাং এই আয়াতটি একদিকে যেমন হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সাঃ)-এর অভূতপূর্ব পদমর্যাদা ও মাকাম বর্ণনা করে অপরদিকে তেমনি উলামাদের আরোপিত ‘খাতামুন্নবীঈন’ শব্দের অর্থকে ভুল সাব্যস্ত করে।
কুরআন শরীফ একটি পূর্ণাঙ্গ কিতাব। ইউফাস্সেরু বা’যুহু বা’য - এর এক অংশ অপর অংশের ব্যাখ্যা প্রদান করে। ‘খাতামুন্নবীঈনের’ যা-ই অর্থ করা হোক না কেন তা পবিত্র কুরআনের অপর আয়াতের মর্মবিরোধী হতে পারে না। কুরআন পাকে আল্লাহতা’লা মানবজাতিকে সম্বোধন করে মনোনীত মহাপুরুষ প্রেরণ করার পথ খোলা থাকার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন; “হে আদম-সন্তানগণ! যদি তোমাদের কাছে তোমাদেরই মধ্য থেকে আমার রসূলগণ আসেন, যারা আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে শুনান, তাহলে যারাই তাক্ওয়া (খোদাভীতি) এবং সংশোধন ব্যবস্থাকে অবলম্বন করবে, তাদের ভবিষ্যতের জন্য কোন ভয় থাকবে না। এবং তারা বিগত কৃতকর্মের জন্যেও দুঃখিত হবে না”। (সূরা আল-আ'রাফ, রুক-৪)
এই আয়াতটি স্বয়ং নবী করীম (সাঃ)-এর উপর নাযিল হয়েছে। এর মাধ্যমে আল্লাহতা’লা মুসলমানদেরকে সম্বোধন করে বলেছেন যে, যখনই আল্লাহর প্রেরিত কোন মানুষ তোমাদের নিকট আগমন করেন তখন তাঁকে যারা মানবে এবং নিজেদের সংশোধন করবে তাঁদের কোন ভয় ও দুঃখ নেই। যদি রসূলে পাক (সাঃ) শরীয়তবিহীন ও শরীয়ত বাহক উভয় ধরনের নবীদের সর্বশেষ হয়ে থাকেন তাহলে আলোচ্য আয়াতে বর্ণিত শিক্ষা আমাদেরকে দেয়ার তাৎপর্য কি? আমরা কি এই আয়াতের সম্বোধিত জাতি নই? আমরা কি আদম সন্তান নই? আহমদীরা বলে, অবশ্যই আমরা এই আয়াতের সম্বোধিত জাতি। যুগের চরম অবনতির সময়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত পুরুষ আসতে পারেন কিন্তু শর্ত হলো তাঁকে উম্মতী অর্থাৎ শরীয়তে মুহাম্মদীয়ার এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পূর্ণ আনুগত্যকারী হতেই হবে (দেখুন: সূরা নিসাঃ ৭০)
সূরা হজ্জের ১০ রুকটি শেষ নবী কথাটির বিরোধিতা করেছে। আল্লাহতা’লা বলেনঃ “আল্লাহতা’লা ফিরিশতাদের এবং মানুষদের মধ্যে থেকে কোন কোন ব্যক্তিকে রসুল বানাবার জন্যে মনোনয়ন করে থাকেন। নিশ্চয় আল্লাহতা’লা সর্বাধিক দোয়া শ্রবণকারী এবং অবস্থাবলী পর্যবেক্ষণকারী।” অর্থাৎ প্রেরিত পুরুষ মনোনয়ন করা তাঁর স্থায়ী সুন্নত। এটি রহিত হয় নি। এই সুন্নত উম্মতে মুহাম্মদীয়ার জন্যও প্রযোজ্য।
খাতামুন্নবীঈন-এর অর্থ যে সব ধরনের নবীদের শেষকারী নয় তার আরও প্রমাণ হাদীস থেকে তুলে ধরছিঃ হুযুর পাক (সাঃ)-এর এক পবিত্র পুত্রের নাম ছিল ইব্রাহীম। হযরত ইব্রাহীম উন্মুল মোমেনীন হযরত মরিয়ম কিবতিয়ার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১৮ মাস বয়সে শিশু ইব্রাহীমের মৃত্যু হয়। হুযুর (সাঃ) তাঁর জানাযার নামায পড়িয়ে বলেনঃ “যদি সে জীবিত থাকতো তবে অবশ্যই সত্যবাদী নবী হতো” [সুনান ইবনে মাজা বাব মা জাআ ফিস্ সালাতে ‘আলা ইবনে রসূলুল্লাহে (সাঃ]। হযরত ইব্রাহীম ‘খাতামুন্নবীঈন আয়াত’ নাযিল হবার চার বছর পর ইন্তেকাল করেন। স্বয়ং হযরত ‘খাতামুন্নবীঈন’ (সাঃ) এই উপাধির অর্থ সবচেয়ে ভাল বুঝতেন। খাতামুন্নবীঈন উপাধি প্রাপ্তির পরও তিনি বলেছেন যে, ইব্রাহীম জীবিত থাকলে অবশ্যই নবী হতো। বুঝা গেল, খাতামুন্নবীঈনের-পরে সব ধরনের নবুওয়ত বন্ধ হয়নি। এক ধরনের নবুওয়তের পথ উন্মুক্ত রয়েছে।
একথা উপলব্ধি করতে পেরেই অর্ধেক দীনের শিক্ষয়িত্রী উম্মুল মোমেনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) বলেছিলেনঃ قولوا انها خاتم الانبياء ولا تقولوالا نبي بعده - (تكملة مجمع البحار - ۸۳) -“হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামকে তোমরা খাতামান্নবীঈন তো বল কিন্তু এমনটি বলো না যে, তাঁর পরে আর কোন প্রকারের নবীই হবে না।” (তকমেলা মাজমাউল বেহার, পৃষ্ঠা-৮৩)
খাতামুন্নবীঈন-এর অর্থ যে সব ধরনের নবীদের শেষকারী নয় তার আরও প্রমাণ হাদীস থেকে তুলে ধরছিঃ হুযুর পাক (সাঃ)-এর এক পবিত্র পুত্রের নাম ছিল ইব্রাহীম। হযরত ইব্রাহীম উন্মুল মোমেনীন হযরত মরিয়ম কিবতিয়ার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১৮ মাস বয়সে শিশু ইব্রাহীমের মৃত্যু হয়। হুযুর (সাঃ) তাঁর জানাযার নামায পড়িয়ে বলেনঃ “যদি সে জীবিত থাকতো তবে অবশ্যই সত্যবাদী নবী হতো” [সুনান ইবনে মাজা বাব মা জাআ ফিস্ সালাতে ‘আলা ইবনে রসূলুল্লাহে (সাঃ]। হযরত ইব্রাহীম ‘খাতামুন্নবীঈন আয়াত’ নাযিল হবার চার বছর পর ইন্তেকাল করেন। স্বয়ং হযরত ‘খাতামুন্নবীঈন’ (সাঃ) এই উপাধির অর্থ সবচেয়ে ভাল বুঝতেন। খাতামুন্নবীঈন উপাধি প্রাপ্তির পরও তিনি বলেছেন যে, ইব্রাহীম জীবিত থাকলে অবশ্যই নবী হতো। বুঝা গেল, খাতামুন্নবীঈনের-পরে সব ধরনের নবুওয়ত বন্ধ হয়নি। এক ধরনের নবুওয়তের পথ উন্মুক্ত রয়েছে।
একথা উপলব্ধি করতে পেরেই অর্ধেক দীনের শিক্ষয়িত্রী উম্মুল মোমেনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) বলেছিলেনঃ قولوا انها خاتم الانبياء ولا تقولوالا نبي بعده - (تكملة مجمع البحار - ۸۳) -“হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামকে তোমরা খাতামান্নবীঈন তো বল কিন্তু এমনটি বলো না যে, তাঁর পরে আর কোন প্রকারের নবীই হবে না।” (তকমেলা মাজমাউল বেহার, পৃষ্ঠা-৮৩)
এবার খাতামুন্নবীঈনের প্রকৃত অর্থ ও তাৎপর্যের দিকে আসা যাক। ‘খাতাম’ শব্দের যত অর্থ রয়েছে তার সব ক’টি অর্থেই আহমদীয়া জামাত হুযুর পাক (সাঃ)-কে খাতামুন্নবীঈন মানে। ‘খাতাম’ শব্দের প্রধান অর্থ হচ্ছে, মা ইউখতামু বিহী - যে যন্ত্র দ্বারা সীল বা মোহরাঙ্কিত করা হয়। অর্থাৎ সীল-মোহর। সুতরাং খাতামুন্নবীঈন বলতে নবীগণের সীল-মোহর বুঝায়। সীল-মোহরের কাজ বন্ধ করা নয় বরং সত্যায়ন করা। সুতরাং খাতামুন্নবীঈন-এর সোজা সরল অর্থ হ'ল নবীগণের সত্যায়নকারী। হুযুর (সাঃ)-এর অভূতপূর্ব শান হচ্ছে এই যে, তিনি কেবল আল্লাহর নবীই নন বরং সব নবীদের সত্যায়নকারীও। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সত্যায়ন করেছেন বলেই আমরা তাঁর পূর্বেকার সকল নবী-রসূলকে সত্য বলে মানি। সেই একই মহানবীর পক্ষ থেকে যদি তাঁর পরবর্তী কোন নবীর জন্য সত্যায়ন থেকে থাকে তবে তিনিও নবী হবেন। অবশ্য সূরা নিসার শর্তানুসারে তাঁতে উম্মতী হতেই হবে।
‘খাতাম’ শব্দের একটি অর্থ আংটি। আংটির কাজ সৌন্দর্য বর্ধন করা। নবীগণের সৌন্দর্য বর্ধনকারী বলতে আমরা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সাঃ)-কেই বুঝি। আংটির আর একটি কাজ হচ্ছে আঙুলকে পরিবেষ্টন করা। এই দিক থেকে খাতামুন্নবীঈনের অর্থ হলো সমস্ত নবীদের গুণাবলীকে পরিবেষ্টনকারী। অর্থাৎ কোন নবীর এমন কোন গুণ নেই যা বিশ্ব নবী রসূলে পাক (সাঃ) অর্জন ও আত্মস্থ করেন নি। সমস্ত নবীদের গুণাবলীর আঁধার তিনি। আরবী ভাষা ও ব্যাকরণ অনুযায়ী খাতামুন্নবীঈনের একটি অর্থ হলো নবীগণের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ। আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ নবী-রসূল অর্থেও হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে মেনে থাকি।
আরেকটি বিষয় পাঠকদের জন্য চমকপ্রদ হবে এবং তা হলো ‘খা’ ‘তা’ ‘ম’ ধাতুটি আলোচ্য ‘খাতামান্নাবীঈন’ আয়াত ছাড়াও বিভিন্ন আকারে কুরআন মজীদে আরও সাতটি স্থানে ব্যবহৃত হয়েছে। অথচ একটি ক্ষেত্রেও শব্দটি ‘শেষ’ অর্থে ব্যবহৃত হয়নি। সুতরাং খাতামুন্নবীঈন এর অর্থ ‘সব ধরনের নবুওয়তের শেষকারী’ করা কুরআন বিরুদ্ধ। বিখ্যাত আরবী অভিধানসমূহে ‘খাতাম’ শব্দের প্রধান অর্থ ‘সীল-মোহর’। শেষকারী অর্থ নয়। আরবী ভাষাও এই অর্থকে সমর্থন করে না।
উম্মতের প্রসিদ্ধ উলামা ও বুযুর্গগণও ‘খাতামুন্নবীঈন’ শব্দের এবং ‘লা নাবীয়া বাদী’ হাদীসের ব্যাখ্যায় সেই কথাই ব্যক্ত করেছেন যা আহমদীয়া জামাত বিশ্বাস করে। এই বুযুর্গ মনিষীদের মধ্যে উম্মুল মুমেনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ), হযরত মুহিউদ্দীন ইবনে আরাবী (রহঃ), হযরত মৌলানা আব্দুল ওয়াহাব শা’রানী (রহঃ), দেওবন্দ মাদ্রসার প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা মুহাম্মদ কাসেম নানোতবী প্রমুখ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
‘খাতাম’ শব্দের একটি অর্থ আংটি। আংটির কাজ সৌন্দর্য বর্ধন করা। নবীগণের সৌন্দর্য বর্ধনকারী বলতে আমরা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সাঃ)-কেই বুঝি। আংটির আর একটি কাজ হচ্ছে আঙুলকে পরিবেষ্টন করা। এই দিক থেকে খাতামুন্নবীঈনের অর্থ হলো সমস্ত নবীদের গুণাবলীকে পরিবেষ্টনকারী। অর্থাৎ কোন নবীর এমন কোন গুণ নেই যা বিশ্ব নবী রসূলে পাক (সাঃ) অর্জন ও আত্মস্থ করেন নি। সমস্ত নবীদের গুণাবলীর আঁধার তিনি। আরবী ভাষা ও ব্যাকরণ অনুযায়ী খাতামুন্নবীঈনের একটি অর্থ হলো নবীগণের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ। আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ নবী-রসূল অর্থেও হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে মেনে থাকি।
আরেকটি বিষয় পাঠকদের জন্য চমকপ্রদ হবে এবং তা হলো ‘খা’ ‘তা’ ‘ম’ ধাতুটি আলোচ্য ‘খাতামান্নাবীঈন’ আয়াত ছাড়াও বিভিন্ন আকারে কুরআন মজীদে আরও সাতটি স্থানে ব্যবহৃত হয়েছে। অথচ একটি ক্ষেত্রেও শব্দটি ‘শেষ’ অর্থে ব্যবহৃত হয়নি। সুতরাং খাতামুন্নবীঈন এর অর্থ ‘সব ধরনের নবুওয়তের শেষকারী’ করা কুরআন বিরুদ্ধ। বিখ্যাত আরবী অভিধানসমূহে ‘খাতাম’ শব্দের প্রধান অর্থ ‘সীল-মোহর’। শেষকারী অর্থ নয়। আরবী ভাষাও এই অর্থকে সমর্থন করে না।
উম্মতের প্রসিদ্ধ উলামা ও বুযুর্গগণও ‘খাতামুন্নবীঈন’ শব্দের এবং ‘লা নাবীয়া বাদী’ হাদীসের ব্যাখ্যায় সেই কথাই ব্যক্ত করেছেন যা আহমদীয়া জামাত বিশ্বাস করে। এই বুযুর্গ মনিষীদের মধ্যে উম্মুল মুমেনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ), হযরত মুহিউদ্দীন ইবনে আরাবী (রহঃ), হযরত মৌলানা আব্দুল ওয়াহাব শা’রানী (রহঃ), দেওবন্দ মাদ্রসার প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা মুহাম্মদ কাসেম নানোতবী প্রমুখ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
মানুষের মাঝে মহত্ব ও হীনত্বের ধারা সর্বযুগেই প্রবাহিত হচ্ছে। কুরানোত্তর যুগে এর ব্যতিক্রম ঘটেছে বলে কোন প্রমাণ মিলে না। মহত্বের ধারাকে জাগ্রত করে হীনত্বকে পরাভূত করার জন্য পরম কুশলী ও করুণাময় আল্লাহ্ নবী-রসূল প্রেরণের চিরন্তন বিধান রেখেছেন। হীনত্বকে জাগ্রত রাখার জন্য সৃষ্ট হয়েছে শয়তান। কুরানোত্তর কালে শয়তান তার ডিউটি ছেড়ে দিয়েছে এরও কোন দলিল-পত্র নেই। বর্তমানে চতুর্দিকে যা ঘটছে তাতে দেখা যায় শয়তান অতীব যোগ্যতার সাথেই তার কর্তব্য সমাধা করে চলেছে। তার প্ররোচনায় আদম সন্তানেরা তাদের মহত্বের কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে হীনত্ব বিস্তারে উঠে পড়ে লেগেছে। নবুওয়তের দ্বারে তালা লাগিয়ে আর শয়তানের দ্বার খোলা রেখে মানবতাকে যে অবক্ষয় হতে বাঁচিয়ে রাখা যায় না তা অন্য কথা বাদ দিলেও বর্তমান মুসলমানেরা তো এর অকাট্য উদাহরণ। এ অবস্থা হতে উত্তরণের পথ না পেলে আমাদের সন্তান-সন্ততির। আরো তলিয়ে যাবে-একথা নিশ্চিতভাবে বলা চলে। নবী-রসুলদের আগমনের সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভেবে দেখবার আছে। কোন শিক্ষা ও আদর্শ যত উন্নতমানের হয় এর পেছনে তত বড় মহান ব্যক্তিত্বের পরশ থাকা চাই। নতুবা তা কার্যকর হয় না। বস্তুতঃ নবী-রসূলগণ ঐ ‘ব্যক্তিত্ব’ দান করে থাকেন। তাঁদের অন্তর্ধানের পর যতই সময় অতিক্রান্ত হয় স্বাভাবিকভাবেই ঐ পরশের প্রভাব ক্ষীণতর হতে থাকে। তাই মানুষের মহত্বকে বাঁচিয়ে রাখতে ও মানবতাকে পুনর্বাসিত করতে হলে নবুওয়তের দ্বার কখনও রুদ্ধ হতে পারে না। আল্লাহ্ তা করেনও নি। আর যদি তা করেন তবে কোন নবীর আগমনই যুক্তিগ্রাহ্য হতে পারে না। তাছাড়া মানুষের চূড়ান্ত অধঃপতন হবে অথচ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পর আর কোন প্রকারের নবীরই শুভাগমন হবে না তাতে তো নাউযুবিল্লাহ্ তিনি দুনিয়ার জন্য রহমত না হয়ে অভিশাপ হয়ে দাঁড়ান।
তা কখনও হতে পারে না। বরং তাঁর মাধ্যমে দীন পূর্ণাংগ, অনুগ্রহ সম্পূর্ণ ও ইসলাম দীনরূপে মনোনীত হওয়া দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, একমাত্র ইসলামেই নবুওয়তের দরজা খোলা আছে এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পূর্ণ আনুগত্য ও অনুসরণের মাধ্যমেই নবুওয়ত লাভ করা যায়। অন্য কোনভাবেই নয়। এ নবুওয়তের মাধ্যমে হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর নবুওয়তেরই প্রতিফলন ঘটে। সূরা নিসার ৭০ আয়াতে একথাই বলা হয়েছে। সূরা ফাতেহার পুরস্কার প্রাপ্তদের পথ চাওয়ার আকুতির পূর্ণতা লাভের কথাই এ আয়াতে বলা হয়েছে। নতুবা দীনের পূর্ণতার কোন আধ্যাত্মিক তাৎপর্য থাকে না। অন্যান্য ধর্মের অনুগামীরাও নিজেদের ধর্মকে পূর্ণই বলে থাকে। ইসলামের পূর্ণতার বৈশিষ্ট্য কোথায়-এ প্রশ্নও এড়িয়ে যাওয়া যাবে না এবং এরও বাস্তবধর্মী জবাব রয়েছে এই আয়াতে।
নবুওয়ত মানব জাতির প্রতি আল্লাহর শ্রেষ্ঠতম রহমত ইহা কুরআনেরই শিক্ষা। প্রত্যেক নবী নিজ দেশ বা জাতির জন্য রহমতরূপে নাযেল হয়েছেন। হযরত নবী করীম (সাঃ)-কে বিশ্বজনীন রহমতরূপে প্রেরণ করা হয়েছে। অতীতে দেশ ও জাতির ভিত্তিতে নবীগণ প্রেরিত হতেন। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সময় হতে দেশ বা জাতির ভিত্তিতে কোন নবীরই আগমন হবে না। মুহাম্মদী শরীয়তকে ভিত্তি করেই নবীর আগমন হবে। এই শরীয়তের পূর্ণ অনুসরণেই যে কোন দেশ বা জাতিতে উম্মতী নবীরই আবির্ভাব হতে পারে। ইহাই মুহাম্মদী শরীয়তের পূর্ণতা ও বিশ্বজনীনতার শ্রেষ্ঠতম ও অকাট্য প্রমাণ। নবুওয়তের দরজা রুদ্ধ করে নয় বরং সকল দেশ ও জাতির জন্য সমভাবে খুলে দিয়েই হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) রাহমাতুল্লীল আলামীন আখ্যায় ভুষিত হয়েছেন। হযরত মির্যা গোলাম আহমদ (আঃ)-এর নবুওয়ত প্রাপ্তি এ সত্যেরই বাস্তবরূপ। হে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্। সবাইকে তুমি এ সত্য উপলব্ধি করার তৌফীক দাও, আমীন।
প্রকাশনায়: আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত, বাংলাদেশ, ৪, বকশীবাজার রোড, ঢাকা-১২১১ (২৭-১১-৯৪ ইং)
তা কখনও হতে পারে না। বরং তাঁর মাধ্যমে দীন পূর্ণাংগ, অনুগ্রহ সম্পূর্ণ ও ইসলাম দীনরূপে মনোনীত হওয়া দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, একমাত্র ইসলামেই নবুওয়তের দরজা খোলা আছে এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পূর্ণ আনুগত্য ও অনুসরণের মাধ্যমেই নবুওয়ত লাভ করা যায়। অন্য কোনভাবেই নয়। এ নবুওয়তের মাধ্যমে হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর নবুওয়তেরই প্রতিফলন ঘটে। সূরা নিসার ৭০ আয়াতে একথাই বলা হয়েছে। সূরা ফাতেহার পুরস্কার প্রাপ্তদের পথ চাওয়ার আকুতির পূর্ণতা লাভের কথাই এ আয়াতে বলা হয়েছে। নতুবা দীনের পূর্ণতার কোন আধ্যাত্মিক তাৎপর্য থাকে না। অন্যান্য ধর্মের অনুগামীরাও নিজেদের ধর্মকে পূর্ণই বলে থাকে। ইসলামের পূর্ণতার বৈশিষ্ট্য কোথায়-এ প্রশ্নও এড়িয়ে যাওয়া যাবে না এবং এরও বাস্তবধর্মী জবাব রয়েছে এই আয়াতে।
নবুওয়ত মানব জাতির প্রতি আল্লাহর শ্রেষ্ঠতম রহমত ইহা কুরআনেরই শিক্ষা। প্রত্যেক নবী নিজ দেশ বা জাতির জন্য রহমতরূপে নাযেল হয়েছেন। হযরত নবী করীম (সাঃ)-কে বিশ্বজনীন রহমতরূপে প্রেরণ করা হয়েছে। অতীতে দেশ ও জাতির ভিত্তিতে নবীগণ প্রেরিত হতেন। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সময় হতে দেশ বা জাতির ভিত্তিতে কোন নবীরই আগমন হবে না। মুহাম্মদী শরীয়তকে ভিত্তি করেই নবীর আগমন হবে। এই শরীয়তের পূর্ণ অনুসরণেই যে কোন দেশ বা জাতিতে উম্মতী নবীরই আবির্ভাব হতে পারে। ইহাই মুহাম্মদী শরীয়তের পূর্ণতা ও বিশ্বজনীনতার শ্রেষ্ঠতম ও অকাট্য প্রমাণ। নবুওয়তের দরজা রুদ্ধ করে নয় বরং সকল দেশ ও জাতির জন্য সমভাবে খুলে দিয়েই হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) রাহমাতুল্লীল আলামীন আখ্যায় ভুষিত হয়েছেন। হযরত মির্যা গোলাম আহমদ (আঃ)-এর নবুওয়ত প্রাপ্তি এ সত্যেরই বাস্তবরূপ। হে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্। সবাইকে তুমি এ সত্য উপলব্ধি করার তৌফীক দাও, আমীন।
প্রকাশনায়: আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত, বাংলাদেশ, ৪, বকশীবাজার রোড, ঢাকা-১২১১ (২৭-১১-৯৪ ইং)
আপনার উত্তর যোগ করুন
আপনার উত্তরটি একজন এডমিন রিভিউ করে অনুমোদন করবেন।