শিখ শাসনামলে মুসলমানদের দুরাবস্থা
প্রথম কথাতো এই যে, হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালাম প্রকৃতপক্ষেই ইংরেজদের প্রশংসা করিয়াছেন এবং একাধিকবার করিয়াছেন। কিন্তু তিনি প্রত্যেক জায়গায় এই কথা বলিয়াছেন যে, আমি এই জন্য ইংরেজদের প্রশংসা করি যে, ভারতের মুসলমানদের, বিশেষভাবে পাঞ্জাবের মুসলমানদের, দূরাবস্থা এমন এক পর্যায়ে গিয়া পৌঁছিয়াছিল যে তাহাদের কোন অধিকারই আর অবশিষ্ট রহিল না এবং শিখ শাসকেরা এইরূপ যুলুম নির্যাতন করিয়াছিল যে ইহার কোন দৃষ্টান্ত অন্যত্র দৃষ্টিগোচর হয় না। ইংরেজ শাসকগণ আসিয়া এই জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড হইতে আমাদিগকে বাহির করিলেন এবং আমাদের সকল অধিকার বহাল করিলেন। এই কারণেই আমিইংরেজ শাসনের প্রংশসা করিতে বাধ হই। কেননা ইহা কেবলমাত্র নবীগণের সুন্নতই নহে, বরং সাধারণ মানবিক সৌজন্যেরও ইহাই তাকিদ যে দয়াকে দয়ার সহিত স্মরণ করিতে হয়। শিখদের আমলে মুসলমানেরা খুবই বিপদজনক অবস্থায় ছিল। ইহাতো হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের বর্ণন। কিন্তু হিন্দু, যাহারা মুসলমানদের তুলনায় শিখদের সহিত খুব বেশী দহরম-মহরম রাখে, তাহাদের গবেষকগণ এই কথা হুবহু স্বীকার করিয়াছে। বস্তুতঃ আমি দুইটি রেফারেন্স নির্বাচন করিয়াছি। ইহার মধ্যে একটি রেফারেন্স অমুসলমানের এবং অন্যটি গায়ের-আহমদী মুসলমানের। এইগুলি হইতে জানা যায়, যে যুগে ইংরেজরা আসিয়া মুসলমানদিগকে এই বিপদ হইতে উদ্ধার করিয়াছিল ঐ যুগে মুসলমানদের অবস্থা কিরূপ ছিল। তুলসী রাম সাহেব ১৮৭২ খৃষ্টাব্দে প্রকাশিত তাঁহার রচিত “শেরে পাঞ্জাব” পুস্তকে লিখেনঃ-
“গোড়ার দিকে লুটতরাজ ও রাহাজানি করাই শিখদের নিয়ম ছিল। তাহারা ধন-সম্পদ লুটতরাজ করিয়া নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে বণ্টন করিয়া দিত। মুসলমানদের প্রতি শিখদের বড় দুশমনী ছিল। তাহারা উচ্চস্বরে মুসলমানদিগকে আযান দিতে দিত না। তাহারা মসজিদগুলিকে নিজেদের অধিকারে লইয়া গিয়া ঐগুলির মধ্যে ‘গ্রন্থ সাহেব’ পাঠ করিতে আরম্ভ করিত এবং তাহারা ইহার নাম রাখিত ‘মওউত কড়া’ (অর্থাৎ কঠোর মৃত্যু)। তাহারা মদ্যপায়ী ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলে যে তাহারা যেখানেই পৌঁছিত সেখানে অন্য ধর্মাবলম্বীর যে সকল হাড়ি পাতিল তাহাদের হস্তগত হইত, তাহারা পাঁচ জুতা মারিয়া ঐগুলিতে খাদ্য পাক করিত। অর্থাৎ তাহারা মনে করিত যে পাঁচ জুতা মারিলে ঐগুলি পবিত্র হইয়া যায়।”
এই শিখ রাজত্বের নাগপাশ হইতে ইংরেজরা আসিয়া মুসলমানদিগকে উদ্ধার করিয়াছিল এবং বিভিন্ন ইতিহাস হইতে ইহা সম্বন্ধে বিস্তারিত ও মর্মান্তিক অবস্থার কথা জানা যায়। মুহাম্মাদ জাফর খানীসরী লিখ ‘সাওয়ানেহ্ আহমদী’ গ্রন্থে হযরত সৈয়দ আহমদ সাহেব বেরলবী রহঃ যিনি হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের পূর্ববর্তী মুজাদ্দেদ ছিলেন, তাঁহার একটি বিবৃতি লিপিবদ্ধ রহিয়াছে। তিনি বলেনঃ “আমি পাঞ্জাবে কোন এক সফরে একটি কূপে পানি পান করিতে গিয়াছিলাম। আমি দেখিলাম যে কয়েকজন শিখ রমণী ঐ কূপে পানি ভরিতেছিল। আমরা সেখানকার স্থানীয় ভাষা জানিতাম না। আমরা নিজেদের মুখে হাত রাখিয়া তাহাদিগকে ইঙ্গিতে বুঝাইলাম যে আমরা পীপাসার্ত, আমাদিগকে পানি পান করাও। তখন ঐ রমণীরা এইদিক সেইদিক দেখিয়া লইয়া পশতু ভাষায় আমাদিগকে বলিল যে, ‘আমরা মুসলমান আফগান রমণী এবং অমুক দেশের অমুক অঞ্চলের বাসিন্দা। এই শিখেরা আমাদিগকে বলপুর্বক ধরিয়া আনিয়াছে’।”
অতএব ইহাতো হযরত সৈয়দ আহমদ সাহেবের জীবনীতে বর্ণিত হইয়াছে। এতদব্যতীত ‘এনসাইক্লোপেডিয়া অব শিখ লিটারেচার’ গ্রন্থে শিখদের জুলুমের ব্যাপারে যে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হইয়াছে, উহাও খুবই মর্মান্তিক। ইহাতে বিপুলভাবে মুসলমান নারীদের শ্লীলতাহানির উল্লেখ করা হইয়াছে। মসজিদগুলি ধ্বংস করা, ঐগুলির মধ্যে গাধা বাঁধিয়া রাখা, মুসলমানদিগকে পাইকারীভাবে হত্যা করা এবং আযান দিলে তাহাদিগকে হত্যা করা - এই সকল কথাই ইহাতে লিপিবদ্ধ আছে।
“গোড়ার দিকে লুটতরাজ ও রাহাজানি করাই শিখদের নিয়ম ছিল। তাহারা ধন-সম্পদ লুটতরাজ করিয়া নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে বণ্টন করিয়া দিত। মুসলমানদের প্রতি শিখদের বড় দুশমনী ছিল। তাহারা উচ্চস্বরে মুসলমানদিগকে আযান দিতে দিত না। তাহারা মসজিদগুলিকে নিজেদের অধিকারে লইয়া গিয়া ঐগুলির মধ্যে ‘গ্রন্থ সাহেব’ পাঠ করিতে আরম্ভ করিত এবং তাহারা ইহার নাম রাখিত ‘মওউত কড়া’ (অর্থাৎ কঠোর মৃত্যু)। তাহারা মদ্যপায়ী ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলে যে তাহারা যেখানেই পৌঁছিত সেখানে অন্য ধর্মাবলম্বীর যে সকল হাড়ি পাতিল তাহাদের হস্তগত হইত, তাহারা পাঁচ জুতা মারিয়া ঐগুলিতে খাদ্য পাক করিত। অর্থাৎ তাহারা মনে করিত যে পাঁচ জুতা মারিলে ঐগুলি পবিত্র হইয়া যায়।”
এই শিখ রাজত্বের নাগপাশ হইতে ইংরেজরা আসিয়া মুসলমানদিগকে উদ্ধার করিয়াছিল এবং বিভিন্ন ইতিহাস হইতে ইহা সম্বন্ধে বিস্তারিত ও মর্মান্তিক অবস্থার কথা জানা যায়। মুহাম্মাদ জাফর খানীসরী লিখ ‘সাওয়ানেহ্ আহমদী’ গ্রন্থে হযরত সৈয়দ আহমদ সাহেব বেরলবী রহঃ যিনি হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের পূর্ববর্তী মুজাদ্দেদ ছিলেন, তাঁহার একটি বিবৃতি লিপিবদ্ধ রহিয়াছে। তিনি বলেনঃ “আমি পাঞ্জাবে কোন এক সফরে একটি কূপে পানি পান করিতে গিয়াছিলাম। আমি দেখিলাম যে কয়েকজন শিখ রমণী ঐ কূপে পানি ভরিতেছিল। আমরা সেখানকার স্থানীয় ভাষা জানিতাম না। আমরা নিজেদের মুখে হাত রাখিয়া তাহাদিগকে ইঙ্গিতে বুঝাইলাম যে আমরা পীপাসার্ত, আমাদিগকে পানি পান করাও। তখন ঐ রমণীরা এইদিক সেইদিক দেখিয়া লইয়া পশতু ভাষায় আমাদিগকে বলিল যে, ‘আমরা মুসলমান আফগান রমণী এবং অমুক দেশের অমুক অঞ্চলের বাসিন্দা। এই শিখেরা আমাদিগকে বলপুর্বক ধরিয়া আনিয়াছে’।”
অতএব ইহাতো হযরত সৈয়দ আহমদ সাহেবের জীবনীতে বর্ণিত হইয়াছে। এতদব্যতীত ‘এনসাইক্লোপেডিয়া অব শিখ লিটারেচার’ গ্রন্থে শিখদের জুলুমের ব্যাপারে যে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হইয়াছে, উহাও খুবই মর্মান্তিক। ইহাতে বিপুলভাবে মুসলমান নারীদের শ্লীলতাহানির উল্লেখ করা হইয়াছে। মসজিদগুলি ধ্বংস করা, ঐগুলির মধ্যে গাধা বাঁধিয়া রাখা, মুসলমানদিগকে পাইকারীভাবে হত্যা করা এবং আযান দিলে তাহাদিগকে হত্যা করা - এই সকল কথাই ইহাতে লিপিবদ্ধ আছে।
আপনার উত্তর যোগ করুন
আপনার উত্তরটি একজন এডমিন রিভিউ করে অনুমোদন করবেন।