আপত্তির জবাব

ইংরেজদের প্রশংসা করার আসল কারণ

সুতরাং ইহা ঐ যুগ ছিল, যখন কিনা মুসলমানেরা শিখদের দ্বারা জীবনের সকল অধিকার হইতে বঞ্চিত হইয়াছিল। হ্যাঁ, অবশ্য আযান দেওয়া হইতে আজও বঞ্চিত করা হইতেছে। (অর্থাৎ আহমদী মুসলমানদিগকে বর্তমান পাকিস্তান সরকার ও তাহাদের দোসররা আযান দানে বাধা-নিষেধ আরোপ করিয়াছে - অনুবাদক)। ইহা এখন কোন পুরাতন কথা নহে। এই যুগেও এইরূপ নূতন লোকদের সৃষ্টি হইয়া গিয়াছে, যাহাদিগকে আযানের ধ্বনি পীড়া দিয়া থাকে। অতি সম্প্রতি ভারতের একজন শিখের একটি চিঠি পত্রিকায় প্রকাশিত হইয়াছে। উক্ত চিঠিতে তিনি লিখেন যে, “আমরা বড় মজা উপভোগ করিয়াছি। কেননা মুসলমানের কোন এক যুগে শিখদিগকে টিটকারী করিত যে তোমরা এইরূপ একটি জাহেল জাতি যে মুসলমানদের আযান শুনিলে তোমরা অশুচি হইয়া যাইতে এবং তোমরা বলপূর্বক মুসলমানদের আযান বন্ধ করিয়া দিয়াছিলে। অতএব তিনি বলেন যে, ‘আজ আমাদের হৃদয় ঠাণ্ডা হইয়াছে যে মুসলমানেরাও মুসলমানদের আযান বন্ধ করিয়া দিয়াছে। আজ আমাদের বিরুদ্ধে ঐ অভিযোগ শেষ হইয়া গিয়াছে এবং আজ আমরা ঐ অভিযোগ হইতে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হইয়াছি’।”

মানব-জীবনে এইরূপ সময় তো আসিতে ও যাইতে থাকে। যখনই জাহেলিয়াত বৃদ্ধি পাইতে থাকে তখনই এই জাতীয় ক্রিয়া-কলাপ সংঘটিত হইতে থাকে। অতএব বিতর্কের বিষয় এই নহে যে শিখেরা খুব খারাপ কাজ করিত। বিতর্কের বিষয় এই যে এই বিপদ হইতে মুসলমানদিগকে যে জাতি পরিত্রাণ করিয়াছে, যদি তাহাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা না হয় তাহা হইলে ইহা কোন ধরনের মানবতা হইবে?

হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ এই যে, তিনি নিজেকে ইংরেজদের রোপিত বৃক্ষ বলেন এবং তাঁহার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ উত্থাপন করা হয় যে, তাঁহাকে ইংরেজরা জেহাদ রহিত করার জন্য দাঁড় করাইয়াছে। এই সকল আপত্তির আমি ধারাবাহিক উত্তর প্রদান করিব। হযরত মসীহ মওউদ আলাইহেস সালাতু ওয়াস সালামের নিজের ভাষায় একটি কথাতো খুবই সুস্পষ্টরূপে জানা যায় যে তিনি কোন খোশামদের উদ্দেশ্যে ইংরেজদের প্রশংসা করিতেন না। বরং ইহা ছিল ইসলামী শিক্ষা অনুযায়ী এক ফরয কর্তব্য হিসাবে বাস্তব সত্যের স্বীকৃতি। ইহার চাইতে অধিক ইহার মধ্যে আর কিছু নিহিত নাই। তিনি (আঃ) বলেনঃ

“অতএব, হে নির্বোধেরা! শুন, আমি এই সরকারের কোন খোশামদ করি না। বরং আসল কথা এই যে এইরূপ সরকার, যাহারা দীন ইসলাম ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কোন হস্তক্ষেপ করে না এবং নিজেদের ধর্মের উন্নতির জন্যও আমাদের উপর তলোয়ার চালায় না, কুরআন শরীফের আলোকে তাহাদের বিরুদ্ধে ধর্ম-যুদ্ধ করা হারাম। কেননা তাহারাও কোন ধর্মীয় যুদ্ধ (জেহাদ) করে না।” (কিশতিয়ে নূহের টাকা, পৃষ্ঠা ৬৮)

অতঃপর তিনি বলেনঃ

“আমার প্রকৃতি কখনও ইহা চাহে নাই যে এই অবিরাম খেদমতের কথা নিজেদের শাসকদের নিকট আদৌ বলি। কেননা আমি কোন প্রতিদান এবং পুরস্কারের অপেক্ষায় ইহা করি নাই, বরং একটি সত্য কথা প্রকাশ করা নিজের কর্তব্য বলিয়া মনে করিয়াছি।” (রুহানী খাজায়েন, ত্রয়োদশ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৪০)।

আপনার উত্তর যোগ করুন

আপনার উত্তরটি একজন এডমিন রিভিউ করে অনুমোদন করবেন।