আপত্তির জবাব

বেরলবীদের বিরুদ্ধে অর্থপূর্ণ সতর্কবাণী

বেরলবীদের বিরুদ্ধে যাহা কিছু হইতেছে, তাহা আপনারা অবগত আছেন। কেননা পত্র পত্রিকায় এইগুলি প্রকাশিত হইতেছে এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট তাহার নিজের একটি বিবৃতিতে ইহাও বলিয়াছেন যে, এখানে (অর্থাৎ পাকিস্তানে) মুশরিকদেরও কোন স্থান নাই। বেরলবী ও দেওবন্দী অথবা নজদী ও বেরলবীদের আসল বিবাদ এই বিষয়টির মধ্যেই নিহিত। বেরলবীরা বলে যে, “আমাদিগকে মুশরিক বলা হয়। কিন্তু আমরা মুশরিক নই।” পক্ষান্তরে তাহারা প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে, দেওবন্দী ও নজদীরা মুশরিক। বস্তুতঃ ইহা একটি অর্থপূর্ণ কথা। ইহাতো হইতে পারে না যে, প্রেসিডেন্টের মুখ হইতে এমনিতেই এই কথা বাহির হইয়া গিয়াছে। ইহাতে একটি সুচিন্তিত স্কীম অনুযায়ী ভবিষ্যতের পলিসির অভিব্যক্তি করা হইয়াছে। আহমদীদিগকে চিহ্নিত করার পর যে তাহাদের এখানে কোন স্থান নাই, এতদসংগে ইহাও বলা হইয়াছে যে মুশরিকদেরও এখানে কোন স্থান নাই।

সুতরাং এই ঐতিহাসিক পটভূমি হইতে ইহা সুস্পষ্ট হইয়া যায় যে নজদী সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্যেও এই বিতর্কই আরম্ভ হইয়াছিল এবং তুরস্ক সরকারের বিরুদ্ধে ইংরেজরা মুসলমানদিগকে এই ভিত্তিতেই বিবাদে লিপ্ত করাইয়াছিল যে, ইহারা মুশরিক এবং মুশরিক সরকারের সাহায্যকারী মহল। ইহারা তোমাদের উপর বর্তমানে অধিষ্ঠিত হইয়াছে। এই জন্য শিরক্‌–এর বিরুদ্ধে জেহাদের যে ঘোষণা করা হইয়াছিল, উহাকে ইংরেজরা নিজেদের উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য ব্যবহার করিল এবং মুসলমানদের একটি মহান সাম্রাজ্যের উপর এত বড় আঘাত হানিল যে, অতঃপর মধ্যপ্রাচ্যে ইংল্যাণ্ড বা ফ্রান্সের অনুপ্রবেশ একটি স্বাভাবিক পরিণতি হইয়া দাঁড়াইল। তুরস্ক সাম্রাজ্য, যাহাকে উসমানিয়া সাম্রাজ্য বলা হয়, উহা যদি ভাঙ্গিয়া না যাইত, তাহা হইলে প্রশ্নই উঠিত না যে, মধ্যপ্রাচ্যে ইংরেজ বা পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের অনুপ্রবেশ ঘটে। সুতরাং এই ধরণেরই একটি ভয়ংকর ষড়যন্ত্র আজ পৃথিবীর বড় বড় শক্তিগুলির পক্ষ হইতে ইসলাম জাহানে করা হইতেছে। এই পাশ্চাত্য শক্তিগুলি কেবলমাত্র পরস্পরের মধ্যে কোন কোন স্বার্থকে একে অন্যের প্রতি হস্তান্তর করিয়া থাকে। কখনো কখনো প্রাচ্যকে ইংরেজরা সামলাইয়া নেয়, কখনো কখনো আমেরিকা সামলাইয়া নেয়, এবং কখনো কখনো অন্য কোন দেশের মাধ্যমে এই চাল চালা হইয়া থাকে। কিন্তু মৌলিক স্বার্থ ইহাদের সকলেরই এক ও অভিন্ন।

আপনার উত্তর যোগ করুন

আপনার উত্তরটি একজন এডমিন রিভিউ করে অনুমোদন করবেন।